ইনভিট্রো পদ্ধতি কি বাঁচাতে পারবে গণ্ডারের এই প্রজাতিটিকে?

১৯৬০ সালে, নর্দার্ন হোয়াইট রাইনো বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ২৩৬০টি গন্ডারকে আফ্রিকার উগান্ডা, সুদান ও কঙ্গোতে পাঠানো হয়। কিন্তু ফল হয় হিতে বিপরীত। চোরাশিকারের জন্য সংখ্যাটা চার অঙ্ক থেকে দুই অঙ্কে নামে - ১৫। হ্যাঁ, ১৯৮৪-তে মাত্র ১৫টি গন্ডার বেঁচে ছিল। আর তার ২৫ বছর পর, ২০০৯-এ গন্ডার এর সংখ্যা হল ৮। এদের ঠিকানা চেক রিপাবলিকের ডিভুর ক্রালোভে জু ও সান ডিয়েগো জু। কিন্তু এই আটটির মধ্যে মাত্র ৪টি প্রজননে সক্ষম। সংরক্ষণকারীরা ভাবলেন, এদের হয়তো অল পেজেটা-তে অর্থাৎ জন্মস্থানে নিয়ে যাওয়া আফ্রিকার জলহাওয়ায় প্রজনন কার্যে সুবিধা হবে।

২০০৯, ডিসেম্বরের হিমশীতল একটা দিন। ডিভুর ক্রালোভে জু থেকে চারটি সাদা গন্ডারকে নিয়ে যাওয়া হয় কেনিয়ার অল পেজেটা অভয়ারণ্যে। এই চারটি প্রাণীর দুটি পুরুষ - সুনি ও সুদান ও দুটি স্ত্রী - নাজিন ও ফাতু।

 কিন্তু এর পরেও তারা গন্ডার জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়। ২০১১ সালে মারা যায় সুনি, ২০১৮-এ সুদান। ফলে আফ্রিকায় নর্দান হোয়াইট রাইনোর প্রতিনিধি এখন নাজিন ও ফাতু। তবে কি গন্ডার প্রজাতি এখানেই শেষ? সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। লেইবনিজ ইনস্টিটিউট ফর জু অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ রিসার্চের রিপ্রোডাকসান ম্যানেজমেন্টের প্রধান টমাস হিলডারব্র্যান্ডট ও তার সহযোগী দল অন্যান্য গন্ডার থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করেছেন। শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয় ছিল সুদানের থেকেও। ২০১৪ সালে যখন নিশ্চিত ভাবে জানা যায় যে নাজিন ও ফাতু প্রাকৃতিকভাবে গর্ভ ধারণে অক্ষম, তখনই হিলডারব্র্যান্ডটের দল শুক্রাণু সংগ্রহ করার কাজ শুরু করে।

সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইনভিট্রো পদ্ধতিতে গন্ডার জন্ম দেওয়া হবে। এই ক্ষেত্রেই প্রথম গন্ডার প্রজননের জন্য ইনভিট্রো পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। সাফল্যের নিশ্চয়তা খুবই কম। তবে তার মধ্যেই আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা। ২২শে অগাস্ট নাজিন ও ফাতুর শরীর থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়েছে। ক্রিমনার গল্লি ল্যাবে এখন ক্রায়োপ্রিসারভে আছে শুক্রাণু আর ডিম্বাণু। অপেক্ষাই এখন সম্বল। এরপরেই হয়ত আসতে চলেছে বিশ্বের প্রথম ইনভিট্রো পদ্ধতিতে পাওয়া নর্দান হোয়াইট রাইনো।