ই-কমার্স মাধ্যম থেকে নিলামে একটি মূর্তি কিনলেন। দাম পড়ল ১৮ হাজার ডলারের কিছু বেশি। এমন আর কী? তাছাড়া বাড়িতে পৌঁছেও দিয়ে যাবে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ বাদে আপনার ঠিকানায় এসে পৌঁছল একটি শূন্য কাঁচের বাক্স। শূন্য মানে একেবারেই শূন্য। তার মধ্যে হাওয়াটুকুও নেই। আপনার যেমনই লাগুক, রীতিমতো জেনেশুনেই এমন অদৃশ্য মূর্তি কিনেছেন ইতালির এক ব্যক্তি। আর সেই মূর্তির কারিগর সালভেটর গারাও তো রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন।
গত মার্চ মাসে এই অদৃশ্য ভাস্কর্য নিলামে তোলার আবেদন জানান গারাও । অবশেষে ইতালির আর্ট-রাইট অর্গানাইজেশন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিলামে মূর্তিটির নাম রাখা হয়েছে ইয়ো শোনো, অর্থাৎ আমি আছি। একমাস ধরে নিলাম চলার পর অবশেষে তা বিক্রিও হয়েছে। অবাক করা ব্যাপার হল, মূর্তিটির দাম অনুমান করা হয়েছিল ৭ হাজার থেকে ১১ হাজার মার্কিন ডলার। কিন্তু বাস্তুবে নিলামের ডাক তাকে অনেকটাই ছাড়িয়ে গেল। ১৮ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারে পৌঁছল অন্তিম মূল্য। সামাজিক মাধ্যমে এই নিলামের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে রীতিমতো গর্ব প্রকাশ করেছেন গাউরু।
তবে গারাওয়ের এমন আচরণে মোটেও খুশি নন ইউরোপের অন্যান্য শিল্পীরা। তাঁর এই আচরণকে লোক ঠকানো বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে গাউরু নিজে একেবারেই পাত্তা দিতে রাজি নন এইসব বিরূপ সমালোচনাকে। তাঁর মতে, শূন্যতাও এক প্রকারের শিল্প। এই প্রসঙ্গে তিনি পদার্থবিদ হাইজেনবার্গের শরণ নিয়েছেন। হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, শূন্যস্থানেরও নিজস্ব ওজন আছে। আর সেই ওজন মানুষের ভাবনার পরিসরকে প্রভাবিত করে বলেও তাঁর বিশ্বাস। তাঁর কথায়, যে ঈশ্বরকে কেউ কোনোদিন দেখেননি তাঁর মূর্তি তৈরিও সেক্ষেত্রে লোক ঠকানো ছাড়া কিছু নয়।
অবশ্য গারাওএর এই অদৃশ্য শিল্পকর্ম বিক্রি এই প্রথম নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ‘বুদ্ধ ইন কনটেমপ্লেশন’ নামে আরেকটি অদৃশ্য ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন। সেটি কিনেছিল মিলানের একটি আর্ট গ্যালারি। এক্ষেত্রে অবশ্য আরও মজার বিষয়, যে ব্যক্তি মূর্তিটি কিনেছেন তাঁরও প্রকৃত পরিচয় জানা যায়নি। সব মিলিয়ে বিষয়টি সত্যিই অদ্ভুত। কী ভাবছেন? পরেরবার কি আপনিও এমন একটি শূন্য ভাস্কর্য কিনবেন?
আরও পড়ুন
১৪ দেশের ৯৫ জন শিল্পীর সংহতি, সুরে-সুরে নতুন সময়ের স্বপ্ন বুনল কিউএসওয়াইএন
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বিক্রি তলানিতে, তবু পুতুল শিল্পকে আঁকড়েই দিনবদলের অপেক্ষায় নতুনগ্রাম