মহাকাশে স্থায়ী ঠিকানা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। গত ২০ বছর ধরে কত না পরীক্ষানিরীক্ষার সাক্ষী এই ল্যাবরেটরি। কিন্তু মহাবিশ্বে কোনোকিছুই যে স্থায়ী নয়। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনেরও এবার আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। অন্তত তেমনটাই জানিয়েছে নাসা। আর বছর দশেকের মধ্যেই স্পেস স্টেশনের আয়ু ফুরোবে। আর তারপর পৃথিবীর বুকেই সমাধিস্থ হবে সমস্ত সরঞ্জাম। সব পরিকল্পনা অবশ্য আগে থেকেই স্থির করা। এবার সেই পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে আনল নাসা। আর ২০৩১ সালের মধ্যেই স্পেস স্টেশন (International Space Station) ধ্বংস করার কাজও সম্পূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৯৮ সালে যখন স্পেস স্টেশনের পরিকল্পনা করা হয়, তখন ঠিক হয়েছিল ১০ বছর কাজ করতে পারবে এমন একটা ল্যাবরেটরি তৈরি করা গেলেই হবে। যদিও বাস্তবে স্পেস স্টেশন তৈরি হয় প্রায় ৩০ বছরের সময়সীমা মাথায় রেখে। তার সমস্ত মডিউল থেকে শুরু করে রাডার এবং ভিতরের কাঠামো, সবই ৩০ বছর কাজ করার উপযুক্ত। অতএব ২০৩১ সাল থেকেই যে গোলযোগ শুরু হবে, তাতে সন্দেহ নেই। আর তখন কোনো দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। তাই ২০৩১ সালের আগেই স্পেস স্টেশনকে সম্পূর্ণভাবে সমাধিস্থ করা হবে। তার কোনো অংশই যেন জনবহুল এলাকার উপর এসে না পড়ে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণে পয়েন্ট নিমোর আশেপাশেই এনে ফেলা হবে সমস্ত সরঞ্জাম।
হাতে সময় ১০ বছরেরও কম। তাই খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে নাসা। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে ধীরে ধীরে পৃথিবীর কক্ষপথের কাছাকাছি টেনে আনা হবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনকে। তারপর একে একে তার বিভিন্ন অংশ আলাদা করা হবে। এর ফলে সেই অংশগুলি পৃথিবীর টানে এগিয়ে আসবে। বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষনে অবশ্য সবই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। তবে বাড়তি সতর্কতার কথা মাথায় রেখেই প্রশান্ত মহাসাগরে সমস্ত অংশ ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পয়েন্ট নিমোর আশেপাশের অঞ্চলে এর আগেও মহাকাশ গবেষণার বহু সরঞ্জাম ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাকাশের সমাধিক্ষেত্র নামেও পরিচিত এই অঞ্চল। আর এবার সেখানেই সমাধিস্থ হবে আস্ত স্পেস স্টেশনটাই। যদিও পরবর্তী স্পেস স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা সম্বন্ধে এখনও কিছু জানায়নি নাসা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা মহাকাশচারী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে জেসিকা