মহামারী করোনা যেমন জনজীবনে আতঙ্ক বিস্তার করছে, তেমনই দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও। দীর্ঘদিন ধরে কারখানার উৎপাদন বন্ধ। ফলে বাণিজ্যের কাঁচামালের সংকট দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কড়া নিষেধাজ্ঞার পরেও অনেক ক্ষেত্রেই উৎপাদন ব্যবস্থার উপর লকডাউন শিথিল করার অভিযোগ উঠছে নানা দেশের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশের গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলি খুলতে চলেছে। আর সরকার ও শিল্পপতিদের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্কও।
রাজধানী ঢাকা ও সংলগ্ন এলাকাকে ঘিরে কয়েকশো গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিকে বলা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতির ফুসফুস। দেশের আন্তর্জাতিক আয়ের ৮০ শতাংশই আসে বস্ত্র শিল্প থেকে। এইসব কারখানার সামগ্রী রপ্তানি করা হয় ইউরোপের নানা দেশ, আমেরিকা, জাপান, ভিয়েতনামে। অসংখ্য বহুজাতিক সংস্থার পণ্য উৎপাদন নির্ভর করে থাকে বাংলাদেশের উপর। ফলে দীর্ঘ লকডাউনের মধ্যে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিলই। সেইসঙ্গে বেহাল অর্থনীতির হাল ফেরাতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন শিল্পপতিরা।
তবে কারখানার উৎপাদন শুরু হওয়া মানেই শ্রমিকদের আবার ফিরে যেতে হবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। আর মারণ ভাইরাস করোনার সংক্রমণ তাতে আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শ্রমিকরা অবশ্য অধিক মজুরির প্রতিশ্রুতি থাকায় খুশি। তাছাড়া কারখানা বন্ধ থাকায় এই একমাস ধরে রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এবার কারখানা খুললে সেই সমস্যা খানিকটা মিটবে বলেই আশাবাদী শ্রমিকরা। তবে মহামারী পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের আরও বেশি বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সরব হয়েছেন অনেক সমাজকর্মী। মানবাধিকার কর্মী কল্পনা আখতার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমনই যে কয়েক হাজার শ্রমিকের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অসম্ভব নয়। পরিস্থিতি এখন কোনদিকে এগোবে? তা অবশ্য সময়ই বলে দেবে…