করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করার কোনো উপযুক্ত অস্ত্রই এখনও চিকিৎসকদের হাতে নেই। তাই উপায় একমাত্র সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। তাই মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছেন সকলেই। সেইসঙ্গে সমস্ত চিকিৎসক অনুরোধ করছেন, খুব প্রয়োজন না পড়লে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। কিন্তু ঘর বলতে যাঁদের কিছুই নেই, সমস্ত দিন কাটে খোলা আকাশের নিচে; সেইসব মানুষরা কেমন আছেন এই বিপদের সময়ে? তাঁদের কথা আদৌ কজন ভেবে দেখেছেন?
এই মহামারী পরিস্থিতিতে সেইসব পথবাসী মানুষদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েই এগিয়ে এল জর্জিয়ার অলাভজনক সামাজিক প্রতিষ্ঠান 'লাভ বেয়ন্ড ওয়ালস'। চার দেয়ালের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা সম্ভব না হলেও, রাস্তায় থেকেও তো পরিচ্ছন্নতা রক্ষা সম্ভব। তার জন্য খুব বেশি কিছু আয়োজনের দরকার নেই। নিয়মিত হাত ধোয়ার জন্য কয়েকটা সিঙ্ক হলেই চলে যায়। আর করোনা পরিস্থিতিতে অ্যাটলান্টা শহরের বুকে এমন উদ্যোগই নিলেন সংস্থার সদস্যরা।
মার্চ মাসের মধ্যেই অ্যাটলান্টা শহরে প্রায় ১২টি অস্থায়ী সিঙ্ক তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সেইসঙ্গে সাবান এবং স্যানিটাইজারের জোগানও দিয়েছিলেন তাঁরা। আর প্রতিদিন তিনবার করে প্রতিটি সিঙ্ক ডিপ ক্লিন করেন তাঁরা। এভাবে সংক্রমণের হার অনেকটাই কমিয়ে আনতে পেরেছেন বলে মনে করছেন সংস্থার কর্ণধার। পথবাসী মানুষরাও তাঁদের ভালোবাসায় কার্পণ্য করেননি।
'লাভ বিয়ন্ড ওয়ালস' সংস্থার এই কর্মসূচি ইতিমধ্যে সমস্ত আমেরিকাতেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। এই প্রকল্পের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন গ্র্যামি পুরস্কারজয়ী লেখক লেক্রি। তাঁর উদ্যোগের ফলে কর্মসূচির পরিধি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমেরিকার অন্যান্য কিছু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে অ্যাটলান্টার সীমানা পেরিয়ে অন্যান্য শহরেও এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করার চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে আছে বার্মিংহাম, কলোম্বাস, বালটিমোর, নিউ অর্ল্যানস, নিউ ইয়র্কের মতো উল্লেখযোগ্য শহর। যেখানে জীবিকার সন্ধানে বহু মানুষ বাস করেন রাস্তায়। এই কঠিন পরিস্থিতিতে এমন ছোট ছোট মানবিক উদ্যোগগুলোই তো সুদিনের স্বপ্ন দেখায়।
Powered by Froala Editor