ভারতবর্ষের বিস্তীর্ণ অঞ্চল যখন ক্রমশ তুর্কী সৈন্য দখল করে নিচ্ছে, তখনই দাক্ষিণাত্যে স্বগর্বে বিরাজ করছে শক্তিশালী রাজ্য বিজয়নগর। তুঙ্গভদ্রার তীরে তার একছত্র অধিকার। তবে এই রাজ্যের ইতিহাস খুব কমই জানা। আজও তার নানা নিদর্শন রয়ে গিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের অগোচরে। ঠিক তেমনই এক নিদর্শন আবিষ্কার হল সম্প্রতি। আর সেটা হল বিজয়নগরের অন্যতম শক্তিশালী রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের মৃত্যুর স্মারকলিপি।
সম্প্রতি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছ, বেঙ্গালুরু নিবাসী প্রাক্তন অধ্যাপক কে আর নরসিমহান তাঁদের কাছে এই প্রস্তরলিপির ছবি পাঠিয়েছেন। আর কন্নড় ভাষায় লেখা সেই প্রস্তরলিপি থেকে রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের মৃত্যুর নির্দিষ্ট দিনটিও জানা গিয়েছে। ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিজয়গড়ে রাজত্ব করেছেন রাজা কৃষ্ণদেবরায়। তবে তাঁর মৃত্যুর সঠিক সময় জানা যায়নি এতদিন। এই প্রস্তরলিপি থেকে জানা যায়, সেটি ১৪৫১ শকাব্দ। আধুনিক আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিনটি ১৫২৯ সালের ১৭ অক্টোবর। দিনটি ছিল রবিবার। প্রস্তরলিপি থেকে এও জানা যায়, সেদিন চন্দ্রগ্রহণ ছিল।
অধ্যাপক নরসিমহান জানিয়েছেন, বিজয়নগরের রাজাদের মৃত্যুর স্মারকলিপি আগে কোনোদিন পাওয়া যায়নি। এ এক ব্যতিক্রমী আবিষ্কার। তবে শুধুই কি রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের মৃত্যুর দিন লিপিবদ্ধ করা হয়েছে? নাকি বিজয়নগরে এমন রেওয়াজ ছিল? আরও কোনো রাজার স্মারক না পাওয়া অবধি অবশ্য এ-বিষয়ে সঠিক কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে কর্ণাটকের হন্নেহালি গ্রামের এক কোণে পাওয়া এই প্রস্তরলিপি ইতিহাসচর্চায় নতুন সম্ভাবনা খুলে দিল। আগামীদিনে হয়তো এই সূত্র ধরেই বিজয়নগরের আরও নানা অজানা ইতিহাস উঠে আসবে। অন্তত তেমনটাই আশা করছেন এএসআই-এর বিশেষজ্ঞরা।
Powered by Froala Editor