দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কণ্ঠে উচ্চারিত রবীন্দ্রনাথের ‘ভারততীর্থ’, জন্মদিনে বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি

বৈশাখ এলেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় ২৫ বৈশাখ পালনের। কবিপক্ষ বলে কথা! কিন্তু এ-বছরের ছবিটা খানিক আলাদা। লকডাউনে ঘরের মধ্যেই আটকা পড়েছেন সকলে। পাড়ায়-পাড়ায় অনুষ্ঠান নেই, আবৃত্তি নেই, গানের সুরে উদাস হচ্ছে না মোড়ের জটলা। কিন্তু এই ‘অন্যরকম’ দিনকালেও, রবীন্দ্রনাথ ব্রাত্য নন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, ঘরে বসেই পালিত হচ্ছে রবীন্দ্র জন্মোৎসব। তেমনই এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে শিল্পী সুজয়প্রসাদ চ্যাটার্জিও।

ভারত সহ আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশের ৩৩ জন ছেলেমেয়ের কণ্ঠে উচ্চারিত হল রবীন্দ্রনাথের লেখা কবিতা 'ভারততীর্থ'। মুক্তি পেল আজ, ২৫ বৈশাখেই। এ এক বিস্ময় তো বটেই! সবাই যখন ঘরবন্দি, তখন সেই বাধাকে স্বীকার করেই প্রযুক্তি এক করল তাঁদের। এক করলেন রবীন্দ্রনাথও। ভিনদেশির কণ্ঠে কবির কথা ফুটে উঠল ভিডিওতে। এসপিসিক্রাফটের হয়ে ভিডিওটি করেছেন অর্ক গোস্বামী। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত সুদূর সিঙ্গাপুর থেকে পাঠিয়েছেন মুখবন্ধ।

https://www.youtube.com/watch?v=rhWy529brZc&feature=youtu.be

কিন্তু হঠাৎ এমন উদ্যোগ কেন? এসপিসি ক্রাফটের কর্ণধার সুজয়প্রসাদ বলেন, এই অন্ধকার সময়ে কবিতাই হয়ে উঠুক প্রার্থনার অন্যতম উপাদান। সেই আশা নিয়েই শরণ নেওয়া রবীন্দ্রনাথের। আজ, ২৫ বৈশাখ প্রকাশিত হল সেই ভিডিও। সুজয়প্রসাদের কথায়, ‘যারা আবৃত্তি করেছে, তারা অন্তর দিয়ে পড়েছে। ব্যকরণের বিশল্যকরণী তারা জানে না। দরকারও নেই। ভাইজাগে যা ঘটেছে তা আমাদের ব্যথিত করেছে। জানিনা, ভারত সব কলুষতা মুক্ত হয়ে আবার কবে মৃত্যুপুরীর দুয়ার থেকে ফিরবে। এই ৩৩ জন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা জানিয়েছে এই তীর্থভূমির জন্য। আমার এই ডিজিটাল দলের কবি প্রণাম আপনাদের সকলের মনে স্থান পাবে এই আশা রাখি।”

‘ভারততীর্থ’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন – ‘দুঃসহ ব্যথা হয়ে অবসান/ জন্ম লভিবে কী বিশাল প্রাণ।/পোহায় রজনী, জাগিছে জননী/ বিপুল নীড়ে,/এই ভারতের মহামানবের/সাগরতীরে। আজকের রোগজর্জরিত ভারতও সেই আশাতেই বুক বাঁধছে। মুক্তির আশা, সুস্থতার আশা। ২৫ বৈশাখের শুভলগ্নে এই উপস্থাপনা সেই আশাকেই উসকে দিল আরও একবার…

More From Author See More