বৃহস্পতিবার ঘুম ভাঙতেই দেবী শেঠ দেখলেন তাঁর ফোনে এসেছে একটি ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে একটি আহত কুকুরকে। ছবিটা দেখামাত্র মাকে নিয়ে তিনি ছুটে গেলেন ঘটনাস্থলে। মুম্বাইয়ের পোয়াই এলাকার গ্যালারিয়া মলের মধ্যেই আহত অবস্থায় পড়ে ছিল প্রাণীটি। সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। দেবী শেঠের বর্ণনা অনুযায়ী, রক্তের একটা ছোট পুকুরের মধ্যে শুয়ে আছে যেন। কাছে গিয়েই বোঝা গেল এমন অবস্থার কারণ। মহিলা কুকুরটির যৌনাঙ্গে ঢুকে আছে প্রায় ১১ ইঞ্চি লম্বা একটি কাঠের লাঠি। না, দুর্ঘটনাক্রমে নয়। স্পষ্ট বোঝা যায় কোনো মানুষ ঠান্ডা মাথায় এই কাজ করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পশুদের বিরুদ্ধে হিংসার নানা ঘটনা উঠে এসেছে। কেরালায় গর্ভবতী হাতিকে খাবারের সঙ্গে বাজি মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা করার কয়েক মাসের মধ্যেই সারা দেশে ৩০০-র বেশি হাতি হত্যার ঘটনা জানা যায়। এর মধ্যেই দিল্লি শহরের একটি ঘটনায় চমকে ওঠেন সবাই। রাস্তার কুকুরকে বাইকের পিছনে দড়ি দিয়ে বেঁধে নৃশংসভাবে টানতে টানতে ঘুরে বেড়ায় এক যুবক। একের পর এক ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়ে যায়, এ কোন সমাজে বাস করছি আমরা?
তবে মুম্বই শহরের এই ঘটনা যেন সমস্ত ঘটনাকেই ছাপিয়ে গেল। শুধুই পশু-হিংসা নয়, সেইসঙ্গে যৌনহিংসার চেহারাও ফুটে উঠল। দেবী শেঠ কুকুরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ফর অলস’-এর কেয়ার সেন্টারে। সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে কুকুরটি। সেইসঙ্গে অজানা আততায়ীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৭ ধারায় মামলাও রুজু করা হয়েছে। সেইসঙ্গে উঠে এসেছে সেইদিন ঔরঙ্গাবাদ শহরে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাও। হাত-পা বেঁধে উপড়ে নেওয়া হয় একটি কুকুরের দুটি চোখ। আর এই কাজটা করেছে দুই নাবালক। একের পর এক ঘটনায় সত্যিই উদ্বেগ বাড়ছে। এই মৃত্যু উপত্যকায় কি সতিই মানবতার উদযাপন সম্ভব?
Powered by Froala Editor