সিন্ধু সভ্যতার সময়েও ছিল দুগ্ধ-প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, বাঙালি প্রত্নতাত্ত্বিকের নেতৃত্বে মিলল প্রমাণ

কৃষিকাজ শেখার পর মানুষ পুরুষ গবাদি পশুদের লাগিয়েছে চাষের কাজে। তবে মহিলা পশুদের অতটা দৈহিক পরিশ্রমের কাজে লাগানো যায় না। তবে মানুষ তাদেরকেও নিজের কাজে লাগিয়েছে। সংগ্রহ করেছে গবাদি পশুর দুধ। আর আজও চিকিৎসকরা স্বীকার করেন, দুধকে প্রায় সুষম খাবার বলা চলে। কিন্তু দুধকে ঘিরে ব্যবসা কত পুরনো? তার শুরুই বা কোথায়? এইসব প্রশ্নেরই চাঞ্চল্যকর উত্তর সামনে নিয়ে এল প্রত্নতাত্ত্বিকদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার। আর এই গবেষণা অনুযায়ী, ভারতেই প্রথম শুরু হয় দুধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প। আর তাও অন্তত ৪৫০০ বছর আগে।

প্রত্নতাত্ত্বিক কল্যাণ শেখর চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন টরন্টো মিসিসাগা ইউনিভার্সিটির একদল ভারতীয় ও কানাডিয়ান গবেষক সম্প্রতি হদিশ দিলেন পৃথিবীর প্রাচীনতম দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের। সিন্ধু সভ্যতার সময়েই গড়ে উঠেছিল এই শিল্প। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী সমস্তরকম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় একথা প্রমাণিত যে দুধকে ঘিরে ব্যবসায়িক পরিসর গড়ে উঠেছিল তখনই। আর এই সময়কাল খুব কম করে হলেও ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। কল্যাণ শেখর চক্রবর্তীর ধারণা অনুযায়ী, সম্ভবত সেই সময় সিন্ধু উপত্যকা অঞ্চলে গবাদি পশুর সংখ্যা হঠাৎ কমতে শুরু করে। আর তখন পশুজাত প্রোটিনের অভাব মিটিয়েছিল দুধই। সিন্ধু সভ্যতার মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করেছিল গবাদি পশুর পাণীয়।

আজও সিন্ধু সভ্যতার ইতিহাসের অনেকটাই অজানার অন্ধকারে ঢাকা। মাত্র ১০০ বছর আগেই তার অস্তিত্বের প্রথম প্রমাণ দেন দয়ারাম সাহানি। তারপর তার নানা অজানা ইতিহাসের সন্ধান দিয়েছিলেন বাঙালি প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আবারও এক বাঙালি প্রত্নতাত্ত্বিকের গবেষণায় উঠে এল অজানা রহস্য। আর গবেষণা বলছে, ছাগল বা ভেড়া নয়, গরু এবং মোষের দুধের সঙ্গেই অভ্যস্ত ছিলেন আদি ভারতীয়রা। মানব সভ্যতার ইতিহাসের কালচিত্র তৈরিতে এই আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন ঐতিহাসিকরা।

Powered by Froala Editor

Latest News See More