২৪ বছরে ১১ হাজার বৃক্ষরোপণ, রুক্ষ উপত্যকায় সবুজ বিপ্লব ‘ঠাকুরদা’র

ঊসর পার্বত্য উপত্যকা। গাছপালা তো নেইই, পানীয় জলেরও অভাব। আর তার মধ্যেই গাছের চারা নিয়ে ঘুরছেন এক প্রৌঢ়। এই উপত্যকাতেই গড়ে তুলবেন জঙ্গল। ২৪ বছর আগে সেই প্রৌঢ়কে নিয়ে হাসাহাসি করেছিলেন সবাই। তবে আজ নিজের স্বপ্নকে সার্থক করে তুলেছেন ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশযোদ্ধা সাদিমান। ২৫০ হেক্টরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন সবুজ বনভূমি।

সাদিমানের বয়স বর্তমানে ৬৯ বছর। স্থানীয় মানুষরা তাঁকে ডাকেন ‘মবাহ’ বা ‘ঠাকুরদা’ নামে। এখন তাঁর জনপ্রিয়তার শেষ নেই। কিন্তু ২৪ বছর আগে যখন প্রথম কাজ শুরু করেন তখন কেউই বিশ্বাস করেননি, এই রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকায় অরণ্য তৈরি সম্ভব। প্রত্যেকেই একবাক্যে বলেছিলেন, লোকটা বদ্ধ পাগল। সেই পাগলের পাগলামি রূপ পেয়েছে আস্ত বনভূমির। ২৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে ১১ হাজারের বেশি বট আর অশ্বত্থের সমাবেশ।

সাদিমানের তৈরি এই বনভূমির ফলে বেড়েছে ভূগর্ভস্থ জলের স্তরও। এখন আর গ্রীষ্মের সময় পিপাসায় কষ্ট পেতে হয় না মানুষের। আর সেইসঙ্গে সারা পৃথিবীর দূষিত বাতাসের অনেকটাই পরিশোধিত হয় এই বনভূমিতে এসে। শুধুই বট আর অশ্বত্থ নয়, এই অরণ্যে আছে জাম কাঁঠালের গাছও। প্রতিটা গাছের কলম তৈরি করেছেন সাদিমান নিজে হাতে।

সাদিমান মনে করেন, এই অরণ্যের মালিক সমস্ত গ্রামবাসী। যাঁরা একসময় তাঁকে পাগল বলেছিলেন, তাদের অর্থনীতিও অনেকটাই চাঙ্গা হবে এই উদ্যোগ থেকে। এমনটাই মনে করেন সাদিমান। আর তাঁর দেখানো পথে হাঁটলে একসময় যে সারা পৃথিবীই ভয়ঙ্কর জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রেহাই পাবে, সেকথা বলাই বাহুল্য। এভাবেই বিশ্বজুড়ে ছোটো ছোটো উদ্যোগ আসলে একটা বড়ো পরিবর্তন আনতে চলেছে।

আরও পড়ুন
কন্যাজন্মের আনন্দে ১১১টি বৃক্ষ রোপণ, এমনই রীতি রাজস্থানের গ্রামে

Powered by Froala Editor