Powered by Froala Editor
প্যারালিম্পিকে সর্বকালের সেরা ফলাফল, পদক পেলেন কারা?
১/১৩
গত আগস্ট মাসের কথা। অলিম্পিকের মঞ্চে নতুন ইতিহাস রচনা করেছিল ভারত। এক অলিম্পিকে ৭টি পদক জিতে ছাপিয়ে গিয়েছিল দেশের সমস্ত রেকর্ড। টোকিও প্যারালিম্পিকে যেন আরও বেড়ে গেল ভারতীয় দলের খিদে। সব মিলিয়ে পকেটে ঢুকল ১৯টি পদক। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি সোনা। প্যারালিম্পিকের ইতিহাসে এই সাফল্য এক কথায় অবিশ্বাস্যই বটে। র্যা ঙ্কিং-এর দিক থেকে দেখতে গেলেও ২৪তম স্থানে শেষ করে এক অনন্য নজির তৈরি করল টিম ইন্ডিয়া।
২/১৩
টোকিওতে তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল ভারতের পদকজয়ের অভিযান। ভাবিনা প্যাটেল মহিলাদের টেবিল টেনিসে ক্লাস-৪ বিভাগে রুপো এনে দিয়েছিলেন ভাবিনা। ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় তথা চিনা প্যারা-অ্যাথলিট ইয়াং ঝাউ-এর সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিলেও থেমে যেতে হয় তাঁকে। অধরা থেকে যায় সোনার স্বাদ।
৩/১৩
একই দিনে ভাবিনার পরেই ভারতকে দ্বিতীয় পদক এনে দেন নিষাদ কুমার। হাইজাম্পের টি-৪৭ ইভেন্টে ২.০৬ মিটারের লাফ দিয়ে রুপো আনেন নিষাদ। তৈরি করেন নতুন এশিয়ান রেকর্ড।
৪/১৩
তবে আরও বড়ো চমক অপেক্ষা করে ছিল ৩০ আগস্ট। হুইলচেয়ারে বসেই স্বর্ণপদকের লক্ষ্যভেদ করেন ভারতের প্যারা-শ্যুটার অবনী লেখারা। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ২৪৯.৬ পয়েন্ট নিশ্চিত করে তৈরি করেন নতুন বিশ্বরেকর্ড। উল্লেখ্য, প্যারালিম্পিক শ্যুটিং-এ এটাই ছিল ভারতের প্রথম সোনাজয়।
৫/১৩
একই দিনে আরও দু’-দুটি ইভেন্টে রুপোর পদক আনে ভারত। ডিসকাস থ্রোয়িং-এ প্রথমে পিছিয়ে পড়েও শেষ চেষ্টায় ৪৪.৩৪ মিটার দূরত্বে ডিসকাস ছোঁড়েন যোগেশ কাঠুনিয়া। দখল করে নেন দ্বিতীয় স্থান। অন্যদিকে জ্যাভেলিনে ভারতকে রুপো এনে দেন ৪০ বছর বয়সী দেবেন্দ্র ঝাঁঝারিয়া। অল্পের জন্য অধরা থেকে যায় স্বর্ণজয়। জ্যাভলিনের ওই একই ইভেন্টে ভারতকে ব্রোঞ্জ এনে দেন সুন্দর সিং গুর্জর।
৬/১৩
জ্যাভেলিন থ্রো-তে দেবেন্দ্র ঝাঁঝারিয়া গত দুটি প্যারালিম্পিকে সোনা আনলেও এবার রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁকে। তবে সেই আক্ষেপ পূরণ করে দেন ভারতের আরেক জ্যাভেলিন থ্রোয়ার সুমিত অ্যান্টিল। জ্যাভেলিনের এফ-৬৪ বিভাগে বিশ্বরেকর্ড করে এক নতুন ইতিহাসের জন্ম দেন সুমিত। ফিরিয়ে দেন অলিম্পিকে নীরজের সোনাজয়ের স্মৃতি।
৭/১৩
পাঁচ বছর আগে রিও প্যারালিম্পিকে তাঁর হাত ধরেই রুপো এসেছিল ভারতে। ৩১ আগস্ট সেই ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি হয় টোকিওতে। হাইজাম্পের টি৪২ বিভাগে রুপো জেতেন মারিয়াপ্পা থাঙ্গাভেলু। একই ইভেন্টে তৃতীয় স্থান দখল করেন প্যারা-জাম্পার শরদ কুমার। পাশাপাশি এই দিনই শ্যুটিং-এ দ্বিতীয় পদক আসে ভারতের। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের এসএইচ-১ ইভেন্টে ভারতকে ব্রোঞ্জ এনে দেন সিংরাজ আধানা।
৮/১৩
হাইজাম্পে ফের সাফল্য আসে ৩ সেপ্টেম্বর। টি৬৪ ইভেন্টে ২.০৭ মিটারের লাফ দিয়ে রুপো নিয়ে আসেন প্রবীণ কুমার। তৈরি করেন নতুন এশিয়ান রেকর্ড। সেইসঙ্গে টোকিও-র মঞ্চে দ্বিতীয়বার পদকজয় করেন অবনী লেখারা। ৫০ মিটার রাইফেলের এসএইচ১ ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন অবনী। একই দিনে অলিম্পিক তীরন্দাজির ব্যর্থতাতে প্রলেপ দেন হারভিন্দর সিং। ডব্লু-২ ইভেন্টে ব্রোঞ্জ এনে দেন হারভিন্দর।
৯/১৩
শ্যুটিং-এ আবারও একটি বড়ো সাফল্য আসে ৪ সেপ্টেম্বর। ১৯ বছর বয়সী প্যারা-শ্যুটার মনীশ নারওয়াল সোনা এনে দেন ভারতকে। পি৪ মিক্সড ইভেন্টে ২১৮.২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে নতুন রেকর্ড তৈরি করেন মনীশ। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও তাঁর এই দুরন্ত প্রত্যাবর্তন মন জিতে নেয় গোটা দেশবাসীরই।
১০/১৩
তবে শুধু মনীশ নন। এই একই ইভেন্টে স্বপ্নের ফর্ম মেলে ধরেছিলেন ভারতের আরও এক শ্যুটার সিংরাজ আধানা। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে এর আগেই ব্রোঞ্জ জিতে নিয়েছিলেন তিনি। ৫০ মিটার পিস্তলে এদিন ফের ঝলসে ওঠেন সিংরাজ। ২১৬.৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করে রুপোজয় করেন ৩৯ বছর বয়সী প্যারা-শ্যুটার। শেষ রাউন্ডে পিছিয়ে না পড়লে হয়তো মনীশের বদলে সোনার পদক ঝুলত তাঁর গলাতেই।
১১/১৩
গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালেই সব মিলিয়ে ভারতের পদকসংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল ১৫-তে। তবে অপেক্ষা করছিল আরও বড়ো চমক। ব্যাডমিন্টন কোর্টে স্বপ্নের পারফর্মেন্স মেলে ধরলেন ভারতের প্যারা-শাটলার প্রমোদ ভগত। ব্যাডমিন্টনের এসএল৩ ইভেন্টে ভারতকে সোনা এনে দেন তিনি। সেইসঙ্গে বিশ্বের এক নম্বর প্যারা-শাটলার হিসাবে তাঁর নাম ওঠে ওয়ার্ল্ড র্যা ঙ্কিং-এ। উল্লেখ্য, প্যারালিম্পিক ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে এটাই ছিল ভারতের প্রথম পদক জয়।
১২/১৩
প্রমোদ যে লড়াইটা শুরু করেছিলেন ব্যাডমিন্টন কোর্টে সেই ধারাটাই শেষদিন বজায় রাখেন ভারতের আরও তিন শাটলার। ব্যাডমিন্টনে ভারতকে দ্বিতীয় পদক এনে দেন নয়ডার জেলাশাসক সুহাস ইয়াথিরাজ। এসএল৪ ইভেন্টে রুপো এনে দেন সুহাস। অন্যদিকে এসএল৩ ইভেন্টে ব্রোঞ্জ আনেন ৩১ বছর বয়সী মনোজ সরকার।
১৩/১৩
টোকিও প্যারালিম্পিকের শেষ লগ্নেও ভারতের বিধ্বংসী মেজাজ বজায় ছিল ব্যাডমিন্টন কোর্টে। টোকিও-র মঞ্চে ব্যাডমিন্টনে ডার্ক হর্স ছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতি ম্যাচেই যেন একটু একটু করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিলেন ২২ বছর বয়সী রাজস্থানের প্যারা-শাটলার কৃষ্ণ নগর। এসএইচ৬ ইভেন্টের ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়, হংকং-এর কাই চু-কে তিনটি সেটেই পরাজিত করেন কৃষ্ণ। তাঁর হাত ধরেই পঞ্চম স্বর্ণপদক যুক্ত হয় ভারতের ট্যালিতে।