এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতও ভয়ংকর বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিপদটা কী, সেটা নতুন করে বলে দিতে হবে না। লকডাউনের মাঝেও দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রশাসন থেকে হাসপাতাল— প্রত্যেকেই যথাসম্ভব চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হল কেরালায়। সেখানে শুরু হল করোনার জন্য বিশেষ ওয়াক-ইন স্যাম্পল কিয়স্ক। ভারতে প্রথমবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হল।
করোনার সম্পূর্ণ উপসর্গ সামনে আসতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে। তার আগে পরীক্ষা ছাড়া এই রোগ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। যত আগে ধরা পড়বে, চিকিৎসকদের ততই সুবিধা হবে। সেই ভাবনা থেকেই এই ওয়াক-ইন কিয়স্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেরালার এরনাকুলাম জেলায় সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে এই কাজ। সমস্ত জায়গায় ঘুরে ঘুরে স্বাস্থ্যকর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করছে। সমস্ত দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এই কাজ হচ্ছে। কালামাসেরি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডাঃ গণেশ মোহনের মাথায় প্রথম এমন ভাবনা আসে। সেটা কার্যক্ষেত্রেও রূপায়িত করেন তিনি।
এই উইস্ক, বা করোনা টেস্ট কিয়স্কটি আসলে দুটো ছোটো কেবিন। যার নমুনা নেওয়া হবে, তিনি কেবিনের সামনে বসবেন। ভেতরে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নেবেন। প্রতিটা কেবিনই কাচ দিয়ে ঘেরা; আর সামনে দুটো রাবারের গ্লাভস আটকানো। বারবার খুলতে-পরতে হবে না। ওই গ্লাভসে হাত ধুকিয়েই স্বাস্থ্যকর্মী নমুনা সংগ্রহ করবেন। প্রতিবার সংগ্রহের পর ওই গ্লাভস দুটিকে পরিষ্কার করা হবে নিয়ম মেনে।
এর ফলে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা যাবে। এর আগেও নানা জায়গায় চিকিৎসকরা বলেছিলেন, যত বেশি টেস্ট করা যাবে, নমুনা সংগ্রহ করা যাবে, ততই সঠিক আক্রান্তের সংখ্যাটা সামনে আসবে। দেরি হলেই ঘোরতর সমস্যা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই নিয়মকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ভারতে এখনও পর্যন্ত সচেতনতা ও পরিকাঠামোর অভাবের জন্য সেরকমটা করা যায়নি। কেরালার এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে অনেকটা এগিয়ে দিল আমাদের। এখন গোটা ভারতে যাতে এই ওয়াক-ইন করোনা টেস্ট কিয়স্ক চালু করা হয়, সেই দাবিই রাখছেন অনেকে। তাহলে শহর তো বটেই, প্রত্যন্ত গ্রামেও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছে যেতে পারবেন।