সময়টা আঠেরো শতক। তখনও কয়েনের রমরমা ভারত জুড়ে। নোটের আবির্ভাব তখনও হয়নি। কয়েনের মাধ্যমে যাবতীয় লেনদেন চালানোয় যে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে, তা বুঝতে পারে ব্রিটিশ শাসকরা। হাজার হোক, বেনের জাত বলে কথা! উনিশ শতকের গোড়ার দিকেই নতুন করে কয়েনের পাশাপাশি কাগজের টাকার ভাবনাচিন্তাও শুরু হল। সরকারি ব্যাঙ্কে এই ব্যবস্থা যাতে চালু করা যায়, ভাবা হল সেই পরিকল্পনাও। সেই সিঁড়ির প্রথম ধাপ হিসেবে ১৮০৬ সালে তৈরি হল ব্যাঙ্ক অফ কলকাতা। তিন বছর পর যার নাম বদলে হয়ে যায় ‘ব্যাঙ্ক অফ বেঙ্গল’।
এই ব্যাঙ্ক থেকেই শুরু ভারতের প্রথম কারেন্সি নোটের। প্রথমে শুধু প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যবহৃত হলেও, পরে সমস্ত জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে কাগজের নোট। প্রথমে অবশ্য নাম ছিল ‘সিক্কা রুপি নোট’। তার সঙ্গে এখনকার নোটের দূরদূরান্ত পর্যন্ত কোনো মিল নেই। অনেকটা ‘প্রমিসারি নোট’-এর মতো শুরুর দিকে এর ব্যবহার ছিল। ১০০, ২৫০, ৫০০ টাকার নোটের প্রচলন হয়েছিল প্রথমে। উনিশ শতকের শেষে সেই পরিধি আরও বিস্তৃত হয়। ১০, ১৫, ২৫, ৫০ টাকার নোটও চলে আসে বাজারে।
সেই সময়ের নোটের খুব কম সংখ্যকই এখনও টিকে আছে মিউজিয়ামে, কিংবা কারোর সংগ্রহে। তবে এককালে যার দাম ছিল সামান্য কয়েক টাকা, আজ তার নিলামের মূল্য কয়েক লাখ ছাড়িয়ে যায়। মরা হাতির দাম সত্যিই এখানে লাখ টাকা!