করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ। তবে পর্যটন শিল্পের ওপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা এখন সরিয়ে নিয়েছে সরকার। আর পুজোর মরশুমেই নতুন করে সমুদ্রের গন্ধ নিতে উদগ্রীব মানুষ। এমন আবহেই ভারতের জন্য ভেসে এল দুর্দান্ত খবর। পৃথিবীর ৫০টি ‘ব্লু ফ্ল্যাগ’ দেশের মধ্যে এই প্রথম জায়গা করে নিল ভারত।
কিন্তু কী এই ‘ব্লু ফ্ল্যাগ’? কীভাবেই বা জড়িয়ে তার সঙ্গে পর্যটন শিল্প? ডেনমার্কের ফাউন্ডেশন অফ এনভায়রনমেন্টাল এডুকেশন সংস্থা এই স্বীকৃতি দিয়ে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে। সমুদ্র সৈকতের দূষণমুক্তি, নান্দনিকতা, সুরক্ষা, পরিচ্ছন্নতার মতো ৩৩ টি শর্তের ওপরে ভিত্তি করেই এই শংসাপত্র দেওয়া হয়। দেখা হয়, পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় সামলেও কীভাবে সমুদ্র সৈকতের রক্ষণাবেক্ষণ করছে কোনো দেশের প্রশাসন।
পাঁচটি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৮টি সমুদ্র সৈকতকে এভার ‘ব্লু ফ্ল্যাগ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বাঙালির অন্যতম পর্যটনের ঠিকানা উড়িষ্যার পুরী সৈকতও। অন্যান্য ৭টি সৈকত হল, শিবরাজপুর (গুজরাট), ঘোঘলা (দিউ), কাসারকোড এবং পাদুবিদ্রি (কর্ণাটক), কাপ্পাদ (কেরল), রুশিকোণ্ডা (অন্ধ্রপ্রদেশ), গোল্ডেন (পুরী-ওড়িশা) এবং রাধানগর (আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ)।
উল্লেখ্য, এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে একমাত্র ভারতই মাত্র ২ বছরের মধ্যে অর্জন করল এই সম্মান। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী প্রভৃতি দেশের ক্ষেত্রে এই সম্মান আদায় করতে সময় লেগেছিল ৫ বছর বা তার থেকেও বেশি। ফলে এই সম্মান যে বড়োসড়ো কৃতিত্ব ভারতের কাছে, তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিক বিচারকদের কাছে ভারত মনোনীত হয়েছে তৃতীয় স্থানে। এই সম্মান পাওয়ার পর বাড়তি উদ্যোমেই চলবে পর্যটন শিল্পকে আরও গুরুত্ব দিয়ে গুছিয়ে তোলার কাজ। সম্প্রতি তেমনটাই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর। জানিয়েছেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশের সঙ্গে প্রকৃতিওক সম্পদের সংরক্ষণ এবং উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষার জন্য বিশেষ নিয়মাবলিও প্রকাশ্যে আসতে চলেছে খুব শীঘ্রই। একপ্রকার কষ্টার্জিত এই স্বীকৃতিকে পরের বছরের জন্যেও ধরে রাখতে মরিয়া ভারত...
Powered by Froala Editor