পুরুষ এবং নারীর বাইরে সমাজে রয়েছে আরও একটি লিঙ্গের মানুষ। তারা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, বা ইংরেজিতে ট্রান্সজেন্ডার। কিন্তু এ দেশে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হয়ে জন্মালে সইতে হয় নানা অপমান। সঠিক শিক্ষা, ভালো ব্যবহার এসবের থেকে এখনও বহু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বিরত থাকেন। কিন্তু সময় পাল্টাচ্ছে, রূপান্তরকামীদের তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অধিকার দিয়েছে সাম্যের। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এখনও বহু মানুষকে ভিন্ন লিঙ্গের অধিকারী হওয়ায় নানা বঞ্চনার মুখে পড়তে হয়। স্কুল কলেজেও অনেক ক্ষেত্রেও এই ধরণের মানুষেরা নানা কারণে অপমানিত হয়েছে, সমাজে এখনও তাদের ছোট করে দেখা হয়। আর এসব ঘোচাতেই রূপান্তরকামীদের জন্যে তৈরি হল বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র রূপান্তরকামীরাই পড়াশোনা করতে পারবেন।
অল ইন্ডিয়া ট্রান্সজেন্ডার এডুকেশন ট্রাস্টের উদ্যোগে কুশীনগরের ফাজিলনগর ব্লকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হয়েছে। আগামী বছর ১৫ই জানুয়ারি দুটি শিশুকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হবে। তারা মানুষ হয়েছে রূপান্তরকামী মানুষদের কাছেই। মার্চ-এপ্রিল মাস থেকে শুরু হবে পঠন পাঠন। শুধুমাত্র স্নাতক হওয়াই নয়, চাইলে তারা পিএইচডিও করতে পারবে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই।
স্বভাবতই এ-খবরে খুশি হয়েছেন রূপান্তরকামীরা। তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে। অনেকেই স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে বহুদূর পড়াশোনা করবেন, কিন্তু নিজেদের মতো করে সেসবের সুযোগ পেতেন না বেশিরভাগ মানুষই। তাঁরাও যে সমাজের অঙ্গ, তাদেরও যে অধ্যাপক বা গবেষক হতে ইচ্ছে করে, এ-কথা ভাবতে পারেন না অনেকেই।
সাম্প্রতিককালে রূপান্তরকামীদের জীবনে এসেছে নানা মুকুট। কেউ কেউ হয়েছেন কোনো কলেজের অধ্যাপক তো কেউ কেউ হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী। তাঁদের স্বপ্ন সফল করতে এমন উদ্যোগকে কুর্নিশ। আশা করা যায়, আগামীদিনে দেশের অন্যত্র এরকম বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে তাঁদের পড়াশোনার সুযোগ সুবিধে বাড়বে আরও৷