আমাদের পৃথিবীর একটিই চাঁদ। আর সেই চাঁদের কেবল একটিমাত্র দিকই আমরা দেখতে পাই। আবার বৃহস্পতির মতো বিরাট গ্রহ, যাকে ঘিরে রেখেছে মোট ৭৯টি উপগ্রহ, তাদের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একইরকম। বৃহস্পতি থেকে বিচ্চুরিত আলো তাদের একটি দিকেই পৌঁছয়। ফলে সমস্ত উপগ্রহের আরেক পৃষ্ঠ অজানাই থেকে যায়। এই অজানা জগতকে ঘিরে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ নতুন নয়। তবে এবার হয়তো সত্যি সত্যি কোনো রাস্তা খুঁজে পেলেন তাঁরা। আর সেই পথ দেখাচ্ছে বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা। এই উপগ্রহে এমন বিকিরণের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যাতে অন্ধকার পৃষ্ঠ থেকেও আলো বিচ্ছুরিত হয়।
ইউরোপা উপগ্রহের আশ্চর্য বিকিরণের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল আগেই। কিন্তু তার প্রকৃত রহস্য ভেদ করলেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানী। সম্প্রতি ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে মূর্তি গুড়িপতির লেখা গবেষণাপত্র। ক্যালিফোর্নিয়ার জেপিএল গবেষণাগারে বসে নানা পরীক্ষানীরিক্ষার পর তিনি দেখালেন কীভাবে অন্ধকারেও জ্বলজ্বল করছে ইউরোপা। আর এই আলোর পিছনে আছে কিছু রাসায়নিকের বিক্রিয়া। বৃহস্পতিপৃষ্ট থেকেই এইসব রাসায়নিক পৌঁছে যায় ইউরোপায়।
বিষাক্ত গ্যাস আর দুর্গম প্রাকৃতিক পরিবেশ নিয়ে বৃহস্পতি গ্রহ। তার বুকে মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে ইউরোপা উপগ্রহকে নিয়ে আলাদা আশা ছিল বিজ্ঞানীদের। সেখানে হয়তো সরল ধরনের কোনো প্রাণী বেঁচে থাকতেও পারে। তবে সে-বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। ইউরোপার রাতের চেহারাও জানতে হবে। আর অধ্যাপক মূর্তির গবেষণা যে সেই রাস্তাটা অনেকটাই সহজ করে দিল, সেকথা বলাই বাহুল্য। এছাড়া কৃত্রিম উপায়ে অনান্য উপগ্রহেও এমন বিকিরণ সৃষ্টি করা যায় কিনা, সে বিষয়েও চিন্তা করছেন নাসার গবেষকরা। সেক্ষেত্রে সৌরজগতের সমস্ত উপগ্রহ সম্মন্ধেই আরও তথ্য সংগ্রহ করা সহজ হবে।
Powered by Froala Editor