স্যর আইজ্যাক নিউটনের হাত ধরেই পদার্থবিদ্যায় খুলে গিয়েছিল নতুন দিগন্ত। জাড্য এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের ওপর নির্ভরশীল তিনটি সূত্র জোয়ার এনেছিল বিজ্ঞানে। আজ ৩৩৫ বছর পেরিয়ে এসেও সনাতনী পদার্থবিদ্যা দাঁড়িয়ে রয়েছে নিউটনের সেই তিনটি সূত্রের ওপরেই। কিন্তু নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রটি বহুলব্যবহৃত হলেও সামান্য ফাঁক রয়ে গেছে তার মধ্যে। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করলেন সিমলার ভারতীয় গবেষক অজয় শর্মা।
ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া বল একে অপরের সমান হয় সবসময়। ছোট থেকে এমনটাই শিখে এসেছি আমরা। তবে ক্রিয়া বল শুধু সমান নয়, প্রতিক্রিয়া বলের থেকে বড়ো এমনকি ছোটোও হতে পারে বলে জানালেন গবেষক অজয় শর্মা। তাত্ত্বিকভাবে তার প্রমাণও দিয়েছেন ভারতীয় এই গবেষক। বৈশ্বিক বিজ্ঞানী সংগঠনও সম্প্রতি স্বীকৃতি দিয়েছে এই দাবিতে। এখন শুধু অপেক্ষা পরীক্ষামূলক প্রমাণের।
কিন্তু নিউটনের সূত্রের এই সীমাবদ্ধতা ঠিক কোথায়? অজয় শর্মা জানাচ্ছেন, প্রতিক্রিয়া বলের পরিমাণ নির্ভর করে ক্রিয়াশীল পদার্থদুটির আকারের ওপরেও। সেই ক্ষেত্রটিই উপেক্ষিত হয়েছে নিউটনের গতিসূত্রে। উদাহরণ স্বরূপ তিনি উল্লেখ করেন, একটি রবারের বলকে মাটিতে ফেললে সংঘর্ষের কারণে সেটি গতিমুখ পরিবর্তন করে উঠে আসে উপরের দিকে। এখন ওই একই পদার্থের, একই ভরের অন্য কোনো আকারের বস্তুকে নিক্ষেপ করা হলে তার ক্ষেত্রে অন্যরকম আচরণ লক্ষ করা যাবে। দেখা যাবে সেটি গতিমুখ পরিবর্তন করলেও কম উচ্চতায় উঠবে। অর্থাৎ প্রতিক্রিয়া বল সেখানে পরিবর্তন হয়েছে স্বয়ং।
কেমব্রিজ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান প্রকাশনা থেকে গবেষক অজয় শর্মার প্রকাশিত দ্বিতীয় বই ‘বিয়ন্ড আইনস্টাইন এন্ড ই=এমসি স্কোয়ার’-এর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী সংগঠনেই যা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। নয়াদিল্লির বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক ভি.পি.এস. আওয়ানা জানিয়েছেন পরীক্ষামূলক গবেষণা ছাড়া এখনই পৌঁছানো যাচ্ছে না চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।
তার জন্যই কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন গবেষক শর্মা। বিশেষ অবস্থা তৈরি করে পরীক্ষাটি সঞ্চালনা করতে কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অনুদানের আবেদন করেছেন কেন্দ্রের কাছে। এখনও অবধি মেলেনি উত্তর। তবে বলাইবাহুল্য পরীক্ষায় কী ফলাফল উঠে আসে তার দিকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে বিজ্ঞান-দুনিয়া...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ক্রমবিলুপ্তির পথে লাল-কাঁকড়া, চিংড়ি; কারণ জানালেন প্রেসিডেন্সির দুই গবেষক