জমা খরচের হিসাবে লোকশানের মুখ দেখেছে দেশের অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানই। আর তার কারণ আর কিছুই নয়, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ পড়েছে সব ক্ষেত্রেই। ভারতীয় রেলওয়ের অবস্থা তো এই পরিস্থিতিতে একেবারেই শোচনীয়। আর হিসাব বলছে ১৬৭ বছরের দীর্ঘ ইতিহাসে যা ঘটেনি, সেটাই ঘটল করোনা পরিস্থিতিতে। লকডাউন পরবর্তী চার মাসে রেল সংস্থা রিজার্ভেশন পিছু যা আয় করেছে, রিফান্ডের কারণে ব্যয় হয়েছে তার থেকে বেশি। অর্থাৎ রিজার্ভেশন খাতে আয়ের পরিমাণ শূন্যের নিচে নেমে গিয়েছে।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের এক ব্যক্তির দাখিল করা আরটিআই রিপোর্টে দেখা যায়, রিজার্ভেশন খাতে রেলের আয় হয়েছে – ৫৩১.১২ কোটি টাকা। প্রথমে কেউ কিছু বুঝতে না পারলে রেলের স্পোক পার্সন ডিজে নারায়ন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেছেন এই সময়ে যে সমস্ত মানুষ রিজার্ভেশন নিয়েছিলেন, তাঁরা বাতিল করায় রিফান্ড দিতে হয়েছে। অন্যদিকে রেল চলাচল আবার কবে স্বাভাবিক হবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে নতুন করে রিজার্ভেশন করতে সাহস পাচ্ছেন না কেউই। আর এর ফলেই আয়ের থেকে ব্যয় বেড়েছে বেশি।
চলতি আর্থিক বছরে যে পরিমাণ লোকশন ঘটেছে, তেমনটা এর আগে কোনোদিন সহ্য করতে হয়নি রেল কর্তৃপক্ষকে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী ৪০ হাজার কোটি টাকার লোকশান মেনে নিতে হয়েছে। পাশাপাশি মাল পরিবহণ ক্ষেত্র থেকে আয় এতদিন সবথেকে বেশি হলেও সেখানেও মন্দার প্রভাব পড়েছে। জরুরি পণ্য পরিবহণ করে কোনো আয় হচ্ছে না। অন্যদিকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্র বিপর্যস্ত থাকায় বাণিজ্যিক পরিবহণ চলছে কোনোমতে। তাতে এই একটি ক্ষেত্রে এখনও লাভের অঙ্কে দাঁড়িয়ে আছে রেল। কিন্তু সব মিলিয়ে এই লোকশানের ধাক্কা সামলে আদৌ কি ব্যবসা চালাতে পারবে রেল? সংশয় তৈরি হয়েছে সবকিছু নিয়েই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
লাইনের দেখভাল করতে, অভিনব ‘রেল বাইসাইকেল’ নিয়ে এল ভারতীয় রেল