দেশজুড়ে করোনা মহামারীর মোকাবিলায় এবার এগিয়ে এল ইন্ডিয়ান রেলওয়ে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশনের জন্য বিশেষভাবে সাজানো হচ্ছে রেলের কামরাগুলি। প্রতিশ্রুতি আগেই ছিল। সেই অনুযায়ী শুরু হয়ে গিয়েছে কাজও। সারা দেশে মোট ২০ হাজার পুরনো রেলকোচে তৈরি হবে বিশেষ আইসোলেশন ওয়ার্ড। তাতে ৩ লক্ষের বেশি রোগী চিকিৎসার সুব্যবস্থা পাবেন বলে জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার কোচের কাজ প্রায় শেষ।
ভারতের মতো ঘন বসতিপূর্ণ দেশে ভাইরাসের সংক্রমণের হার স্বাভাবিকভাবেই বেশি। হাসপাতালেও আইসোলেশনের সুযোগ পর্যাপ্ত নয়। তাই সংকট মোকাবিলায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেল মন্ত্রকের কর্তারা। গত রবিবার একটি বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করার কথা জানানো হয়। আর তারপরেই দেখা যায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেলের পাঁচটি বিভাগেই তৈরি হয়েছে আইসোলেশন কোচ। আপাতত নন এসি স্লিপার কামরাগুলিকেই এই কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। রোগীদের সুবিধার জন্য প্রতিটি কোচের মিডল বার্থ বাদ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে দুদিকের সিটের মাঝের অংশে অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে এই ভ্রাম্যমাণ আইসোলেশন কোচ। করোনা আক্রান্ত রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগীকেই এখানে রাখা হবে না। তবে প্রয়োজন মতো ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন প্রতিটি কোচে। প্রতি কোচে ৮ জন থেকে ১৬ জন পর্যন্ত রোগীকে রাখা সম্ভব। সেভাবেই তৈরি হয়েছে নক্সা। আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর রাতারাতি সেই কাজ প্রায় শেষ করে ফেলা হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে প্রতিটি কোচ। হাসপাতালের যাবতীয় সুবিধাই এখানে থাকবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। রোগীদের সুবিধার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে স্নানঘরগুলিও।
দেশজুড়ে করোনা মহামারীর মধ্যে আইসোলেশনের যথেষ্ট সুবিধা নেই, এমন কথা বলছিলেন অনেকেই। আর এর ফলেই বাড়ছিল সংক্রমণ। তাই জরুরি পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়ান রেলওয়ের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এখন সরকার এবং সাধারণ মানুষ এই সুযোগের সদব্যবহার করলে পরিস্থিতি যে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে, সে কথা বলাই যায়।