যে তালিকায় নাম ছিল চার্লস ডারউইন, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বা নেলসন ম্যান্ডেলার; সেই তালিকাতেই নাম তুলতে চলেছেন এক মহিলা বিজ্ঞানী। তাঁকে শুধু বিজ্ঞানী বললে অবশ্য ভুল হবে। বলা ভালো, এদেশে মহিলাদের বিজ্ঞানচর্চার একটি অপরিচিত দিক তুলে ধরেছেন তিনি। অধ্যাপিকা শোভনা নরসিমহান দুই দশক ধরে কাজ করছেন দিল্লির জহরলাল নেহেরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্স সায়েন্টিফিক রিসার্চে। তাঁর গবেষণার বিষয় ন্যানো টেকনোলজি। আনবিক স্তরে বিভিন্ন ধাতুর চরিত্রের বদল নিয়ে তাঁর বিভিন্ন গবেষণা ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সমাদৃত। তবে তার থেকেও বড়ো বিষয়, তিনি চান বিজ্ঞানের গবেষণায় মহিলারা এগিয়ে আসুক। আর এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উদ্যোগও নিয়েছেন তিনি।
তাঁর সেই উদ্যোগের কথা মাথায় রেখেই তাঁকে বিশেষ সম্মান জানানোর কথা ভেবেছেন আমেরিকান অ্যাকাডেমি ফর আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের আধিকারিকরা। সংস্থার সম্মানিত সদস্য হিসাবে মনোনিত হয়েছে অধ্যাপিকা শোভনার নাম। যে পদে বিভিন্ন সময়ে থেকেছেন পৃথিবীর বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও সমাজকর্মীরা।
২০১০ সালে ভারত সরকার কর্তৃক স্ত্রী শক্তি সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন অধ্যাপিকা শোভনা। সেবছরই কর্ণাটক সরকার তাঁর হাতে তুলে দেয় কল্পনা চাওলা পুরস্কার। এছাড়া বিভিন্ন সময় সরকারের নানা টাস্ক ফোর্স ও কমিটির সদস্য হিসাবে থেকেছেন তিনি। এমনকি ইতালি, রুয়ান্ডা এবং আমেরিকার একাধিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে জহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্স সায়েন্টিফিক রিসার্চের অ্যাকাডেমিক ডিন হিসাবে কর্মরত অধ্যাপিকা শোভনা নরসিমহান।
মহিলাদের বিজ্ঞানচর্চার বিষয়ে তাঁর নিরলস উৎসাহ ইতিমধ্যে পৃথিবী জুড়ে সমাদৃত। তাঁর সেই কাজের প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকান অ্যাকাডেমি ফর আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স তাঁকে সাম্মানিক সদস্য হিসাবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সংস্থাটি প্রায় তিনশো বছর ধরে বিজ্ঞান, কলা ও সমাজবিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক গবেষণার স্বাক্ষর রেখেছে। এমন একটি সংস্থার সঙ্গে অধ্যাপিকা শোভনার নাম জড়িয়ে পড়া আমাদের দেশের জন্যও যেমন গর্বের বিষয়, তেমনই অধ্যাপিকার কাজও এবার আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পেতে চলেছে। তাই মহিলাদের বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসও এই ঘটনা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।