অস্ট্রেলিয়ার কোভিড মোকাবিলায় অবদান ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানীরও

গোটা বিশ্বের গতিপ্রকৃতিই এক ঝটকায় বদলে দিয়েছিল কোভিড-১৯। তার প্রভাব থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি মানব সভ্যতা। তবে যখন ভারত, ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলে দ্রুত বাড়ছিল করোনার ট্যালি, তখন প্রাথমিকভাবে সাফল্যের হাসি হেসেছিল অস্ট্রেলিয়া। এমনকি অস্ট্রেলিয়া এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সবথেকে কম প্রভাবিত দেশগুলির মধ্যে একটি। আর এই কৃতিত্বের পিছনে রয়েছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি।

মহামারীর শুরুতেই মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল আক্রান্তদের শনাক্তকরণ। দরকার হয়ে উঠেছিল কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই ছড়িয়ে পড়ছিল সংক্রমণ। ঠিক এই ঘটনারই মোকাবিলা করতে অভিনব এক পন্থা নিয়েছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের মাইক্রোবায়োলজিস্ট সুধী পায়েপ্পট। কেরালায় জন্মগ্রহণকারী এই ভারতীয় কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সনাক্তকরণের জন্য পথ হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন নিকাশি ব্যবস্থাকে।

অবাক লাগছে নিশ্চয়ই? ভাবছেন নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে কীভাবে চিহ্নিত করা যাবে কোনো আক্রান্তকে? লাগারই কথা। কিন্তু একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন কীভাবে কাজ করছে পুরো প্রক্রিয়াটি। ধরা যাক, কোনো কোভিড আক্রান্ত এবং তাঁর উপসর্গও দেখা দেয়নি সেভাবে। কিন্তু তাঁর শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি তো রয়েইছে। কাজেই ব্রাশ করা কিংবা নিছকই মুখ ধোয়ার সময় তাঁর শরীর থেকে করোনাভাইরাস মিশতে থাকে জলে। আর সেই জলই তো নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে এসে জমা হয় সিউয়েজে। 

পায়েপ্পট সরকারি সংস্থা সিডনি ওয়াটারের সঙ্গে জোট বেঁধেই নেমেছিলেন এই কর্মযজ্ঞে। প্রতিটি নিকাশি ডিভিশনের জল পরীক্ষার জন্য লাগানো হয়েছিল শনাক্তকরণ যন্ত্র। আর সেখানেই বাজিমাত। ভাইরাসের অস্তিত্ব পেলেই এই যন্ত্র সরাসরি মেল পাঠিয়ে দিত কোভিড-এর আধিকারিকদের কাছে। তবে এই পদ্ধতিতে কোনো একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু কোনো একটি আবাসনে ভাইরাসের প্রকোপ দানা বেঁধেছে কিনা, তা সহজেই চিহ্নিত করা যেত। তারপর বিশেষভাবে তার যোগাযোগ ছিন্ন করে চলত র্যা পিড টেস্ট। 

আরও পড়ুন
নাসার মঙ্গল-অবতরণের অন্যতম কাণ্ডারী দুই বাঙালি-সহ চার ভারতীয় বংশোদ্ভূত

বিগতও ২০ বছর ধরেই সিডনি ওয়াটারে গবেষণা করছেন এই ভারতীয় বিজ্ঞানী। জল নিকাশি ব্যবস্থা হোক কিংবা সরবরাহ— এর আগে বহুবার প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পথ দেখিয়ে চমক লাগিয়েছিলেন পায়েপ্পট। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরেই আবার নতুন উদ্যমে কাজে নেমেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের এপ্রিল মাসেই বন্দোবস্ত করেন এই প্রযুক্তি। মহামারীর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর উদ্ভাবনী যে অস্ট্রেলিয়াকে লড়াই করার সামর্থ্য জুগিয়েছিল, তাতে অস্বীকারের জায়গা নেই কোনো…

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কোভিড-পরবর্তী কর্মক্ষেত্রে, কী ভাবছেন কর্পোরেটের মহিলা নেতৃত্বরা?