আজ থেকে আনুমানিক ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাব হয়েছিল। মোটামুটি এইটুকু তথ্যের বিষয়ে সমস্ত বৈজ্ঞানিক একমত। কিন্তু ঠিক কীভাবে শুরু হয়েছিল যাত্রাপথ? এত প্রাচীন ইতিহাসের রহস্য ভেদ করা সত্যিই কঠিন। বিজ্ঞানের জন্মলগ্ন থেকে মানুষ সেই উত্তর খুঁজে চলেছেন। আর সেই অনুসন্ধানে সবচেয়ে নতুন তত্ত্বের ধারণা দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী রামনারায়ণ কৃষ্ণমূর্তি।
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষণা সংস্থা স্ক্রিপস রিসার্চে বসে গবেষণা করেছেন কৃষ্ণমূর্তি। আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘আনগেওয়ান্তে কেমি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেই গবেষণাপত্র। জীবনের মূলগত একক বলতে ডিএনএ তন্তুর কথা তো সকলেরই জানা। কিন্তু কীভাবে সৃষ্টি হল ডিএনএ? আর সেই ডিএনএ তন্তুর আবির্ভাবের অর্থই কি প্রাণের সূচনা? কৃষ্ণমূর্তির গবেষণা জানাচ্ছে, ডিএনএ তন্তুর সঙ্গে আরএনএ তন্তুর সংযোগেই প্রাণের সূচনা হয়েছে। আর তার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে আরও অনেক আগে।
কৃষ্ণমূর্তির গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, সমুদ্রের জলে ডায়ামিডোফসফেট নামক রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি প্রথম জীবনের সংকেত দেয়। এই রাসায়নিকের প্রভাবেই ডিএনএ এবং আরএনএ তন্তু একত্র হয়। এর আগে মনে করা হত ডিএনএ তন্তুর সঙ্গে প্রোটিনের সমন্বয়েই প্রথম প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। তারপর ক্রমশ আরএনএ তন্তুর আবির্ভাব ঘটেছে। তবে রামনারায়ণ কৃষ্ণমূর্তি পিসিআর প্রযুক্তির সাহায্যে বেশ কিছু আদিম এককোষী জীব ও ভাইরাসের চরিত্র বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন ডিএনএ ও আরএনএ তন্তুর বয়স প্রায় সমসাময়িক। আর প্রাণের সূচনার ক্ষেত্রে এই দুই অণুর ভূমিকাই সমান তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও এখনও এই ধারণাকে তত্ত্বের আকারেই রাখা হয়েছে। তবে জীবনের আবির্ভাবের রহস্য উন্মোচনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানীর দেখানো এই নতুন ধারণা সত্যিই গবেষণার জগতে এক বড়ো বাঁকবদল।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
তিমির পূর্বপুরুষ? জুরাসিক যুগের সামুদ্রিক প্রাণীর হদিশ দিল জীবাশ্ম