১৯৫৯ সালের গণিত-ধাঁধা সমাধান করে পুরস্কার ভারতীয় বংশোদ্ভূতের

১৯৪০ সালে কোয়ান্টাম মেকানিক্স সংক্রান্ত একটি গবেষণার সূত্রে নতুন গাণিতিক সমস্যার মুখে পড়েন পল ডিরাক। তারও ১৯ বছর পর দুই মার্কিন গণিতজ্ঞ রিচার্ড কাডিসন এবং ইসাডোর সিনজার সমস্যাটি নিয়ে গবেষণা করেন। শেষ পর্যন্ত দুজনেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে, কোনো লিনিয়ার ফাঙ্কশনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। পরে আরও বহু গণিতজ্ঞ এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত সেই ঐতিহাসিক সমস্যার সমাধান করেই সিপরিয়ান ফইয়াজ পুরস্কার পেতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত গণিতজ্ঞ নিখিল শ্রীবাস্তব (Nikhil Srivastava)।

২০১৩ সালেই কাডিসন-সিনজার সমস্যার সমাধান করেছিলেন নিখিল। অবশ্য তিনি একা নন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইৎজারল্যান্ডের গণিতজ্ঞ অ্যাডাম মার্কাস এবং মার্কিন পরিসংখ্যান বিশেষজ্ঞ ডানিয়েল স্পিলম্যান। অবশ্য প্রথমে তাঁদের সমাধান মানতে চাননি অনেকেই। তবে গত ৮ বছর ধরে নানা ক্ষেত্রে এই সমাধান কাজে লেগেছে। তাত্ত্বিক গণিত এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বাইরেও কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো প্রয়োগমূলক ক্ষেত্রে সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁদের সমাধান। আর চলতি শতাব্দীতে এখনও অবধি সবচেয়ে বড়ো গাণিতিক আবিষ্কার এই কাডিসন-সিনজার সমস্যার সমাধান, এমনটাই মনে করছেন সিপরিয়ান ফইয়াজ পুরস্কার কমিটির জুরিরা।

২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি প্রথমবারের জন্য অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সিপরিয়ান ফইয়াজ পুরস্কারের আসর। আর এখনও পর্যন্ত এটিই ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো গাণিতিক সম্মেলন হতে চলেছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেই পুরস্কার পেতে চলেছেন নিখিল শ্রীবাস্তব। অবশ্য নিখিল এবং তাঁর সহকর্মীরা এই সাফল্যের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব নিতে অস্বীকারই করেছেন। বিশ শতকের শেষ কয়েক দশকে যে অসংখ্য গণিতজ্ঞ এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সমান অবদান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিশেষত, ইটারেটিভ পার্সফকেশন নামে যে পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে, ১৯৭৯ সালে জোয়েল অ্যান্ডারসন সেই সম্ভাবনার দিকেই নির্দেশ করেছিলেন। তবে এই আবিষ্কারের জন্য প্রথমবার পুরস্কৃত হচ্ছেন না নিখিল। এর আগে ২০১৪ সালে পেয়েছেন জর্জ পলিয়া পুরস্কার। গত বছরই পেয়েছেন হেল্ড পুরস্কার। ৮ বছর আগের সেই আবিষ্কারই আবার পুরস্কার এনে দিল।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
শুধু ‘মন্দার’-ই নয়, ভারতীয় চলচ্চিত্রে একাধিকবার ছায়া ফেলেছে ম্যাকবেথ