ইউরোপ-আফ্রিকার মতোই আমেরিকার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম। এমনকি রাজনীতির জগতেও তাঁরা পিছিয়ে থাকেননি। তবে ইতিহাসে এই প্রথমবার সেই অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কোনো ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক। আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত করা হয়েছে কমলা হরিশের নাম। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেন ট্যুইটারে তাঁর নাম প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে জানান, কমলার মতো যোগ্য নেত্রীর সঙ্গে কাজ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আরও সহজ হবে।
১৯৬৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ড শহরে জন্ম কমলা হরিশের। তাঁর মা তামিলনাড়ুর মেয়ে। আর বাবা জামাইকা থেকে গিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস শুরু করেন। রাজনীতির সঙ্গে যদিও কারোরই তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু ৮০ ও ৯০ দশকের বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আকর্ষণ অনুভব করেছিলেন কমলা। ৯০-এর দশকে তিনি হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির আইনের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেও আন্দোলনের আঁচ এসে পড়েছিল। সেই থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া। তবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো ছিল না। কিন্তু ট্রাম্পের মতো শক্তিশালী নেতার বিরুদ্ধে লড়াইতে, এবং বিশেষ করে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা পরবর্তী বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কমলার উপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্ব।
ছাত্ররাজনীতির মঞ্চ ছাড়িয়ে কমলা হরিশ পা রেখেছেন মূল ধারার রাজনীতির মঞ্চেও। দীর্ঘ সময় আমেরিকার সেনেটে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বও সামলেছেন। তবে তাঁর জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি বৃদ্ধি পায় চলতি দশকের শুরুতে। এই সময় দক্ষিণপন্থী ধারার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনেক জায়গাতেই সামাজিক বৈষম্য প্রকট হতে থাকে। আর তার ফলেই বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলন নতুন তাৎপর্য দাবি করে। বর্তমানে সেই আন্দোলন এক চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছেছে। আর তাই মানুষের সাধারণ দাবির প্রতিফলন ঘটাতে বিতর্ক সরিয়ে রেখে গাঁটছড়া বেঁধেছেন কমলা এবং বিডেন। তাঁরা কি পারবেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে? হোয়াইট হাউসে কি সত্যি সত্যি পা রাখবেন কোনো ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মাত্র ২২ বছর বয়সে ঘোষণা ‘আমিই আমেরিকা’, বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার মহম্মদ আলি