বয়স মাত্র ১১। আমেরিকার একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাতাশা পেরি। কিন্তু এই বয়সেই তার পড়াশোনার পরিধি সবাইকে অবাক করেছে। স্যাট এবং অ্যাক্ট পরীক্ষায় সে উত্তীর্ণ হয়েছে অনায়াসে। হ্যাঁ, স্কোলাস্টিক অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট এবং আমেরিকান কলেজ টেস্টিং পরীক্ষা। যে-দুটি পরীক্ষার ফলকে মার্কিন কলেজে ভর্তির মাপকাঠি হিসাবে ধরা হয়, যার উপর ভিত্তি করে সারা পৃথিবীর অসংখ্য পড়ুয়ার উচ্চশিক্ষার বৃত্তি স্থির করে বিভিন্ন সংস্থা, সেই পরীক্ষায় অনায়াসে পাস করেছে পঞ্চম শ্রেণির পেরি। আর এর ফলে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী পড়ুয়া হিসাবে স্বীকৃতিও দিয়েছে আমেরিকার একটি সংস্থা।
নিউ জার্সির থেলমা এল স্যান্ডমিয়ার এলিমেন্টারি স্কুলের পড়ুয়া পেরি। গতবছর সে নাম দিয়েছিল জন হপকিন্স সেন্টার ফর ট্যালেন্টেড ইয়ুথ আয়োজিত একটি ট্যালেন্ট সার্চ প্রতিযোগিতায়। অবশ্য প্রতিযোগীর সংখ্যা নেহাৎ কম ছিল না। বিশ্বের ৮৪টি দেশের প্রায় ১৯ হাজার পড়ুয়া এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষার নিয়ম অবশ্য একটু অন্যরকম। এখানে প্রত্যেক প্রতিযোগীকেই প্রশ্ন করা হয় তার পরবর্তী ক্লাসের বিষয়বস্তু থেকে। সেখান থেকে প্রথম ১০ শতাংশকে বেছে নেওয়া হয় তার পরবর্তী ক্লাসের পরীক্ষার জন্য। এভাবে একটি একটি করে সিঁড়ি টপকে যেতে হয়। তবে পেরির ফলাফলে অবাক খোদ পরীক্ষকরাও। সে অনায়াসে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ১০ শতাংশে জায়গা করে নিয়েছে। অর্থাৎ তিনটি সিঁড়ি পেরিয়ে গিয়েছে পেরি। গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে আয়োজিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে সোমবার। আর সেখানে সমস্ত প্রতিযোগীদের মধ্যে পেরির নাম সবার উপরে।
জন হপকিন্স সিটিওয়াই-এর নিজস্ব পরীক্ষা এবং তার সঙ্গে স্যাট ও অ্যাক্ট পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে বিচারকরা জানিয়েছেন, পেরি এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী পড়ুয়া। তাই তাকে সবরকম সাহায্য করার বিষয়ে প্রস্তুত সংস্থা। অন্যদিকে পেরির বক্তব্য, এই সাফল্য তার পড়াশোনার ইচ্ছাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কঠোর পরিশ্রমের অনুপ্রেরণা পেয়েছে সে। পেরি সহ সারা পৃথিবীর ২০০ জন পড়ুয়াকে বেছে নিয়েছে জন হপকিন্স সিটিওয়াই। এই ২০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে একটি সামার ক্যাম্প। পাশাপাশি তাদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি অনলাইন চ্যানেলও তৈরি করা হবে। সেই চ্যানেলের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের পড়াশোনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। প্রতি বছরই এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জন হপকিন্স সিটিওয়াই। কিন্তু পেরির মতো সাফল্য ইতিপূর্বেও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন বিচারকরা। নাতাশা পেরি সত্যিই এক বিস্ময়।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বিরল আইকিউ-র অধিকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘ইয়ং আইনস্টাইন’