হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে স্পিতি উপত্যকায় বাস করে এক শ্রেণীর স্নো লেপার্ড। মানুষের আশেপাশে তারা সহজে আসে না। তবে এখন সময় বদলাচ্ছে। হিমাচল প্রদেশের তিব্বত সীমান্তের কাছে গিউ গ্রামে তেমনই একটি স্নো লেপার্ডের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল গ্রামবাসীরা। গভীর রাতে গ্রামে হানা দিয়ে গৃহপালিত পশুদের লুঠ করে নিয়ে যাচ্ছিল এই প্রাণীটি। অবশেষে স্থানীয় এক গ্রামবাসীর ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়ল এই জন্তুটি। এবং তাকে তুলে দেওয়া হল বনকর্মীদের হাতে।
তবে এখানেই ঘটনার শেষ নয়। বন দফতরের সিদ্ধান্তকে ঘিরে এরপরেই বিতর্কে নেমেছেন পরিবেশ কর্মীরা। বন দফতরের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাণীটিকে তার বাসস্থানে ছেড়ে না দিয়ে সিমলার চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরিত করা হবে। মানুষের জীবনের উপর এই প্রাণীটির ভয়ঙ্কর প্রভাবের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। তবে এই বিরল প্রজাতির প্রাণীটির উপর এই সিদ্ধান্তের কী প্রভাব পড়তে পারে, তাই নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মতে, সিমলার পরিবেশের সঙ্গে এই প্রাণীটি আদৌ মানিয়ে নিতে পারবে কিনা, সেবিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়। তাছাড়া এই দীর্ঘ পথ গাড়িতে গেলে তার শরীরের যথেষ্ট ক্ষতি হতে পারে। বন্যপ্রাণীর জীবনের উপর এমন অত্যাচার করার কোনো অধিকার মানুষের নেই।
হিমালয়ের পাদদেশে বহু শতাব্দী ধরে বাস স্নো লেপার্ডের। মানুষের বাসস্থানের দিকে সে খুব একটা আসে না। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই অবস্থা বদলাচ্ছে। একদিকে যেমন মানুষ ক্রমশ পাহাড়ের উত্তরদিকে সরে যাচ্ছে, তেমনই খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে বন্য প্রাণীদের মধ্যেও। আর এই পরিস্থিতিতে মানুষের নিরাপত্তা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, দুদিকেই সমান দৃষ্টি রাখা সম্ভব হবে কিনা জানা নেই। প্রাণীটিকে চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যেমন প্রতিবাদ উঠছে, তেমন কোন সমাধানসূত্র দিতে পারছেন না কেউই।