ভারতবর্ষ পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল এবং সর্বাধিক জনঘনত্বের দেশ। স্বাভাবিকভাবেই এদেশের পরিবেশ এবং অর্থনীতি অত্যন্ত জটিল। আর এই দুই ক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ধারণা নিয়ে হাজির হয়েছেন দিল্লির ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ মোহন। ২০১৮ সালে তাঁর তৈরি প্রতিষ্ঠান ‘টাকাচার’ পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষকদের জন্য বিকল্প আয়ের রাস্তা নিয়ে হাজির হয়। আর এর মধ্যেই জাতিপুঞ্জের ২০২০ সালের ‘ইয়ং চ্যাম্পিয়ন্স অফ আর্থ’ পুরস্কার পেতে চলেছেন ভারতবর্ষের এই ইঞ্জিনিয়ার।
প্রতি বছর সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্টের জন্য সারা পৃথিবী থেকে ৭ জন প্রাপকের হাতে ‘ইয়ং চ্যাম্পিয়ন্স অফ আর্থ’ পুরস্কার দেয় জাতিপুঞ্জের এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি। এবছর সেই তালিকাতেই রয়েছে ২৯ বছরের বিদ্যুৎ মোহনের নাম। ২০১৮ সালে ‘টাকাচার’ নামের প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ কৃষকদের থেকে তাঁদের ফসলের ফেলে দেওয়া অংশ কিনে নিয়ে তা থেকে জ্বালানি, সার বা অ্যাক্টিভ কার্বনের মতো মূল্যবান রাসায়নিক তৈরি করা। খড়, ধানের শিষ বা নারকেলের ছোবড়া, যা কোনো কাজে লাগবে না ভেবে পুড়িয়ে দেন কৃষকরা, সেগুলোই হয়ে উঠছে বিকল্প আয়ের উৎস।
বিদ্যুৎ মোহনের কথায়, বর্তমানে প্রকৃতি-পরিবেশ যেভাবে সঙ্কটে রয়েছে, তাতে কোনো প্রতিষ্ঠানই এই পরিস্থিতি উপেক্ষা করে টিকে থাকতে পারবে না। আর এই বিষয়ে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য জাতিপুঞ্জের উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং নতুন সবুজ অর্থনীতির পরিকল্পনায় তাঁর প্রচেষ্টারও ভূয়সী প্রশংসা করেছে জাতিপুঞ্জ। তাঁদের তরফ থেকে আশা করা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাতাসে কার্বনের পরিমান ৫ গিগাটন পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারবে ‘টাকাচার’। একদিকে মহামারীর ধাক্কায় যখন সামগ্রিক অর্থনীতি সঙ্কটে, অন্যদিকে একের পর এক দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পরিবেশের করুণ চেহারা, তখন এরকম উদ্যোগ আরও বেশি করে প্রয়োজন মনে করছে জাতিপুঞ্জ।
এই পৃথিবী মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে ওঠার আগেই তাকে বদলে ফেলতে হবে। আর এই ভাবনা থেকেই এগিয়ে আসছেন তরুণ প্রজন্ম। সেই যাত্রাপথে বিদ্যুৎ মোহনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। আর সেইসঙ্গে একজন ভারতীয়ের কৃতিত্ব সত্যিই প্রশংসনীয়।
Powered by Froala Editor