বয়স মাত্র ১৩ বছর। পেরোয়নি কৈশোরের গণ্ডিও। কিন্তু তা বলে কি চুপ করে থাকা যায় পরিবেশের প্রতি মানুষের এমন দায়সারা মনভাব দেখেও? তাই নিজেই প্রকৃতির ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় কিশোরী। বেছে নিয়েছিল প্রতিবাদের পথকেই। আর তার জন্যই সম্প্রতি বিবিসির প্রকাশিত বিশ্বের প্রথম ১০০ প্রভাবশালী ও অনুপ্রেরণামূলক নারীদের তালিকাতেই জায়গা করে নিল খুদে পরিবেশকর্মী ঋদ্ধিমা পাণ্ডে।
তবে এর শুরু বেশ কিছু বছর আগে থেকেই। বয়স তখন মাত্র ৯ বছর। জলবায়ু পরিবর্তনে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল ঋদ্ধিমা। শুধু প্রতিবাদ, প্ল্যাকার্ডেই থেমে থাকেনি সে। সরাসরি পৌঁছে গিয়েছিল প্রশাসনের দরবারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল বায়ুদূষণের কথা। আবেদন রেখেছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণে যেন ন্যূনতম দায়িত্ব নেয় সরকার। নাহলে পরবর্তীকালে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়েই স্কুলে যেতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।
গত ডিসেম্বর মাসেও সংবাদপত্রের শিরনামে উঠে এসেছিল উত্তরাখণ্ডের এই কিশোরী। ‘সেভ থানো ফরেস্ট’ আন্দোলনে সে ছিল একজন সক্রিয় চরিত্র। দেরাদুন বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কারণে ১০ হাজার গাছ কাটার ঘটনায় সরব হয়েছিল ঋদ্ধিমা। তাছাড়াও বিশ্বের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাহায্য, বৃক্ষরোপণ এবং পরিবেশের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে খুদে পরিবেশকর্মী। অনলাইন প্রচার ছাড়াও জাতিসংঘ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও অংশ নিয়েছে সে।
ঋদ্ধিমা পাণ্ডে ছাড়াও প্রথম ১০০ প্রভাবশালী মহিলার তালিকায় স্থান পেয়েছেন আরও তিন ভারতীয় মহিলা— মানসী জোশি, ইসাইওয়ানি এবং বিলকিস বানো। কিশোরী ঋদ্ধিমা আশাবাদী, একদিন তাঁর মতো ভারতের অন্যান্য খুদে পড়ুয়ারা, বিশেষ করে ছাত্রীরাও সামিল হবে এই আন্দোলনে। তাঁর লড়াই সেই স্বপ্নের জন্যই। পরিবেশ বাঁচাতে এমনই এক প্রাচীর গড়ে তুলতে উদ্যোগী বলেই জানাচ্ছেন ঋদ্ধিমা।
Powered by Froala Editor