তিনদিক সমুদ্রে ঘেরা দেশ ভারত। আর সমুদ্রতীরের অন্যতম আকর্ষণ সেখানকার জীববৈচিত্র। ভারতের সামুদ্রিক প্রাণীদের কথা বলতে গেলে অবশ্য কাছিমের কথা না বলে থাকা যায় না। তবে আজ থেকে ৫০ বছর আগেও এই দেশে যত কাছিম দেখা যেত, আজ তা্র প্রায় কিছুই দেখা যায় না। এর মধ্যে হয়তো বেশ কিছু প্রজাতি হারিয়েই যেত। কিন্তু বিজ্ঞানীদের সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার কারণে আজও তারা টিকে আছে। আর কাছিম সংরক্ষণের বিষয়ে যে মানুষটি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁর নাম ডঃ শৈলেন্দ্র সিং। সম্প্রতি ভারতের এই জীববিজ্ঞানীর নাম উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। চলতি বছর বেহলার টার্টল কনজার্ভেশন অ্যাওয়ার্ড পেতে চলেছেন তিনি।
আগস্ট মাসের শেষেই টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে শৈলেন্দ্র সিং-এর নাম। তুলে ধরা হয়েছে গত দুই দশক ধরে তাঁর কাজের হিসাব এবং তার তাৎপর্য। ভারতের বেশ কিছু বিপন্ন কাছিম প্রজাতিকে রক্ষা করার বিষয়ে ডঃ শৈলেন্দ্র সিং এবং তাঁর সহকর্মীদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে রেড ক্রাউন রুফড টার্টল, নর্থার্ন রিভার টেরাপিন এবং ব্ল্যাক সফটসেল টার্টলের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রথম এবং শেষ প্রজাতিদুটির দেখা মেলে মূলত দেশের পূর্ব উপকূলে, বঙ্গোপসাগরের দিকে। অন্যদিকে রিচার টেরাপিন মূলত গঙ্গা ও তার অববাহিকায় দেখা যায়। তিনটি প্রজাতিকেই বিপন্ন প্রাণীর স্বীকৃতি দিয়েছিল আইইউসিএন। তবে ডঃ সিং এবং তাঁর সহকর্মীদের চেষ্টায় বর্তমানে একটু একটু করে বাড়ছে তাদের সংখ্যা। আর এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি তাদের নিরাপদ ঘোষণা করাও সম্ভব হবে বলে মনে করছেন টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্সের সদস্যরা।
২০০৬ সাল থেকেই সারা পৃথিবীতে কাছিম সংরক্ষণকে উৎসাহ দিতে বেহলার পুরস্কার দিয়ে আসছে টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। বর্তমানে এই উদ্যোগের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে আরও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা। এর মধ্যে রয়েছে আইইউসিএন এবং টার্টল কনজার্ভেশন ফান্ডের মতো প্রতিষ্ঠানও। এমন একটা পুরস্কার পাওয়ার খবরে স্বভাবতই খুশি ডঃ সিং। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই পুরস্কার তাঁর কাজকে আরও সহজ করে তুলবে। ইতিমধ্যে ডঃ সিং-এর সঙ্গে বিশেষ প্রকল্পে হাত লাগানোর কথাও জানিয়েছে টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। খুব তাড়াতাড়ি এই প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনায় বসবেন দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা। আর এই পুরো বিষয়টাই সম্ভব হচ্ছে ডঃ সিং-এর এতদিনের কাজের জন্যই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
এক শতাব্দী আগে বিলুপ্ত কচ্ছপের প্রজাতি এখনও লুকিয়ে গ্যালাপাগোসের অরণ্যে