রয়্যাল গোল্ড মেডেল পেলেন ভারতের কিংবদন্তি স্থাপত্যবিদ বালকৃষ্ণ দোশি

ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডোলজি, টেগোর মেমোরিয়াল হল, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, আহমেদাবাদের ভূগর্ভস্থ আর্ট গ্যালারি ‘আমদাবাদ নি গুফা’-সহ একাধিক ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় স্থাপত্যের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে তাঁর নাম। বালকৃষ্ণ দোশি (Balkrishna Doshi)। বছর তিনেক আগে, ২০১৮ সালে স্থাপত্যবিদ্যার সর্বোচ্চ সম্মান প্রিৎজকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। এবার তাঁর মুকুটে জুড়ল আরও একটি পালক। রয়্যাল ইনস্টিটিউট অফ ব্রিটিশ আর্কিটেক্টসের রয়্যাল গোল্ড মেডেল (Royal Gold Medal) পেতে চলেছেন অশীতিপর ভারতীয় স্থপতি।  

স্থাপত্যের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন এমন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে প্রতি বছর এই বিশেষ মেডেল প্রদান করে থাকে রয়্যাল ইনস্টিটিউট। তবে কোনো সাম্প্রতিক নির্মাণ নয়, বরং আজীবন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বালকৃষ্ণ দোশিকে এই বিশেষ সম্মাননা জ্ঞাপন করতে চলেছে রয়্যাল ইনস্টিটিউট। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর হাতে এই স্মারক তুলে দেবেন ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেথ। 

১৯২৭ সালে পুনেতে জন্ম বালকৃষ্ণ দোশির। মুম্বাইয়ের জেজে স্কুল অফ আর্কিটেকচার থেকে পড়াশোনা করার পর ১৯৫০ সালে ভারত ছাড়েন তিনি। সেসময় প্যারিসে সিনিয়র ডিজাইনার হিসাবে বছর চারেক কাজ করেন দোশি। সঙ্গী ছিলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি স্থাপত্যবিদ লা কর্বুসিয়ের। ১৯৫৫ সালে দেশে ফেরার পর একাধিক স্থাপত্য প্রকল্প দেখভালের দায়িত্ব বর্তায় তাঁর ওপর। ওই একই বছরে মুম্বাইতে নিজের স্টুডিও খোলেন দোশি। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর কাছে প্রস্তাব আসে আহমেদাবাদ আইআইএম-এর ক্যাম্পাস নির্মাণের। ফরাসি স্থপতি লুই কান এবং রাজ অনন্তের সঙ্গে জুটি বেঁধেই বাস্তবায়িত করেন আইআইএমের নীল-নকশা। 

দীর্ঘ সত্তর বছরের কর্মজীবনে ১০০টিরও বেশি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন দোশি। যার মধ্যে শুধু বাণিজ্যিক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নয়, রয়েছে একাধিক সাংস্কৃতিক ভবনের নির্মাণও। তাছাড়াও আবাসন নির্মাণ এবং নানান জনকল্যাণমূলক প্রকল্পেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে তিনি। যার অন্যতম উদাহরণ ইন্দোরের অরণ্য লো কস্ট হাউসিং। সব মিলিয়ে এই আবাসন জায়গা করে দিয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে। 

আরও পড়ুন
৫০টির বেশি ব্যাঙের প্রজাতি আবিষ্কার, ভারতীয় বিজ্ঞানীকে বিশেষ সম্মাননা

স্থাপত্য নির্মাণ ছাড়াও, দীর্ঘদিন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন বালকৃষ্ণ দোশি। সামলেছেন আহমেদাবাদ স্কুল অফ আর্কিটেকচার, আহমেদাবাদ ভিস্যুয়াল আর্ট সেন্টার, কনোরিয়া সেন্টার অফ আর্টসের ডিরেক্টর পদ। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্কুল অফ প্ল্যানিং-ও। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানেও অতিথি অধ্যাপকের ভূমিকা পালন করেছেন দোশি। দেখতে গেলে শুধু ভারত নয়, আধুনিক স্থাপত্যজগতে তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বেই। 

আরও পড়ুন
পরিবেশরক্ষায় অবদান, বিশেষ পুরস্কার পেল কলকাতার জল-জাদুঘর

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
১৯৫৯ সালের গণিত-ধাঁধা সমাধান করে পুরস্কার ভারতীয় বংশোদ্ভূতের

Latest News See More