স্মার্ট টয়লেট-ই বলে দেবে রোগের কারণ, অভিনব আবিষ্কার ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানীর

শরীরে কোনো রোগের বাসা বেঁধেছে কিনা, তা জানার জন্য অনেকসময় মল বা মূত্র পরীক্ষা করতে দেওয়া হয় ল্যাবে। এবার তার আর প্রয়োজন পড়বে না। ‘স্মার্ট টয়লেট’-ই বলে দেবে কোনো ব্যক্তি রোগাক্রান্ত কিনা। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত প্রবাসী ভারতীয় বিজ্ঞানী সঞ্জীব গম্ভীরের দল তৈরি করে ফেললেন এমনই টয়লেট।

সঞ্জীব গম্ভীরের তত্ত্বাবধানে একটি বিজ্ঞানীর দল এই কাজে নিযুক্ত ছিলেন। একাধিক রোগের চিহ্নিতকরণ করতে সক্ষম এই প্রযুক্তি। এমনকি কলোরেক্টাল থেকে ইউরোলোজিক ক্যানসারকেও শনাক্ত করতে পারবে এই টয়লেট।

তবে এই টয়লেট এককভাবে ব্যবহার করতে হবে কোনো ব্যক্তিকে, যিনি জেনেটিক রোগে আক্রান্ত। তা হতে পারে প্রস্টেট ক্যানসার, কিডনির সমস্যা বা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী পেটের রোগ। রুটিন চেকআপে থাকা এই রোগীদের আর বারবার পরীক্ষার প্রয়োজন পড়বে না।

সঞ্জীব গম্ভীর এই বিষয়ে জানান, প্রায় ১৫ বছর আগের ভাবনা এটি। বিষয়টি হাস্যকর হলেও অনেকেই এগিয়ে এসেছিল গবেষণাটির সমর্থনে। এই প্রযুক্তি অনেকের শারীরিক অবস্থার খেয়াল রাখতে সাহায্য করবে। সম্প্রতি এর কথা প্রকাশ পেয়েছে ‘নেচার বায়োমেডিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ পত্রিকায়। এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ২১ জন রোগীর শনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে ইতিমধ্যেই।

এই টয়লেটের আকার সাধারণ টয়লেটের মতোই। তবে ভিতরে লাগানো হয়েছে মোশান সেন্সার। যা আলাদা করবে মল বা মূত্রের নমুনা। তারপর ভৌত ও আণবিক পরীক্ষা চালাবে নমুনার। এরপর স্বয়ংক্রিয় এই টয়লেট সেই তথ্য সরাসরি আপলোড করবে এর সঙ্গে যুক্ত থাকা ক্লাউড ড্রাইভে। ভবিষ্যতে আরও উন্নত করে তোলা হবে এই প্রযুক্তি। পরীক্ষায় আসা তথ্যগুলি সরাসরি পাঠানো যেতে পারে কোনো রোগীর পর্যবেক্ষণে থাকা চিকিৎসকদের।

এই প্রযুক্তির নাম অনবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ। যা অনেকটা স্মার্ট ঘড়ির মতোই। তবে টয়লেট সবাই-ই ব্যবহার করে নিয়মিত। সুতরাং, স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই এক্ষেত্রে। এবং সব থেকে অবাক করার ব্যাপার, এই টয়লেটের রয়েছে ব্যক্তি শনাক্ত করারও ক্ষমতা। টয়লেটের ফ্লাস ধরতে পারবে আঙুলের ছাপ। তাই আলাদা আলাদা ব্যক্তি একটি টয়লেট ব্যবহার করলেও ভুল হবে না নমুনা আলাদা করতে।

ইতিমধ্যে যাঁদের নমুনার পরীক্ষা করা হয়েছিল, তাঁদের ৫২ শতাংশ জানিয়েছেন এই পদ্ধতি অনেকটাই সহজ। বলাই বাহুল্য, কিছুদিনের মধ্যেই সাড়া ফেলে দেবে এই আবিষ্কার। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আর দৌড়াতে হবে না স্বাস্থ্য পরীক্ষাগারে।