Powered by Froala Editor
কপ-২৬ সম্মেলনে ভারতীয় কিশোরীর বক্তৃতা, কে এই বিনিশা উমাশঙ্কর?
১/৯
মঞ্চে উপস্থিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তার মধ্যেই বক্তৃতার জন্য এক ১৫ বছরের ভারতীয় কিশোরীকে ডেকে নিলেন ডিউক অফ কেমব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম। সভার সকলে স্তব্ধ হয়ে শুনলেন বিনিশা উমাশঙ্করের কথা। মঙ্গলবার গ্লাসগো শহরে কপ-২৬ সম্মেলনে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে বিনিশা।
২/৯
পরিবেশ আন্দোলনে সারা পৃথিবীজুড়েই এগিয়ে আসছে তরুণ প্রজন্ম। তাঁদেরই ভারতীয় প্রতিনিধি বিনিশা। ইতিমধ্যে বিনিশাকে ভারতের গ্রেটা থানবার্গ বলেও ডাকছেন অনেকে। কপ-২৬ সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সে সরাসরি সমস্ত রাষ্ট্রনেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে বলছে, এই পরিস্থিতিতে তাঁদের প্রতি ক্রুদ্ধ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। তবে ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজ করে যাওয়াতেই বিশ্বাসী বিনিশা।
৩/৯
গ্লাসগো সম্মেলন বিনিশার পরিচিতির পরিধি অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে নিঃসন্দেহে। তবে পরিবেশ আন্দোলনে সে একেবারেই নতুন মুখ নয়। বিগত ৩ বছর ধরে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে অক্লান্ত কাজ করে চলেছে বিনিশা। তার নানা আবিষ্কার চমকে দিয়েছে পরিবেশকর্মীদের। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার অবশ্যই সৌরবিদ্যুৎ চালিত আয়রনিং কার্ট।
৪/৯
তামিলনাড়ুর তিরুবান্নামালাই শহরের বাসিন্দা বিনিশা উমাশঙ্কর। ২০১৮ সালে ১২ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে ধোপাখানা গিয়ে সে দেখেছিল কীভাবে কয়লা পুড়িয়ে ইস্ত্রি করার তাপশক্তি তৈরি করা হচ্ছে। গরমে ধোপাদের যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনই কয়লা পোড়ানোর ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে চারিদিক। আর এই সমস্যার সমাধানের জন্য বিনিশা নিজেই তৈরি করে ফেলল একটি আয়রনিং কার্ট।
৫/৯
প্রায় ৬ মাস ধরে পদার্থবিদ্যার নানা বই ঘাঁটাঘাঁটি করে ২০১৯ সালের শুরুতে বিনিশা তৈরি করে আয়রন ম্যাক্স। ইতিমধ্যে তামিলনাড়ুর অনেক ধোপাই এই সোলার কার্ট ব্যবহার শুরু করেছে। তামিলনাড়ুর বাইরেও এই আবিষ্কারকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিনিশা।
৬/৯
শুধুই আয়রন ম্যাক্স নয়, আরও বেশ কিছু পরিবেশবান্ধব যন্ত্র তৈরির জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিনিশা। ইতিমধ্যে সে এমন একটি সিলিং ফ্যান আবিষ্কার করেছে, যাতে পারিপার্শিক বায়ুপ্রবাহের নিরিখে ফ্যানের গতি পরিবর্তিত হবে। এর ফলে বিদ্যুতের অপচয় কমবে অনেকটাই। আর একেবারে সাধারণ পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তৈরি এইসমস্ত যন্ত্রের দামও বেশ কম।
৭/৯
পাশাপাশি পড়াশোনাতেও যথেষ্ট ভালো ছাত্রী হিসাবে পরিচিত বিনিশা। সেইসঙ্গে বিতর্ক, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, জিমন্যাস্টিক, যোগার মতো বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী সে। একাধিক প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতেছে সে।
৮/৯
২০১৯ সালে আয়রন ম্যাক্স আবিষ্কারের জন্য এপিজে আবদুল কালাম ইগনাইট পুরস্কার পায় বিনিশা। সেই বছরই তার তৈরি সিলিং ফ্যানটির জন্য পায় ডঃ প্রদীপ পি তিভান্নুর ইনোভেশন পুরস্কার। ২০২০ সালে চিলড্রেন’স ক্লাইমেট পুরস্কার জিতে নেয় বিনিশা। এছাড়া চলতি বছরে আর্থশট পুরস্কারের দৌড়েও রয়েছে সে।
৯/৯
বিগত কয়েক দশকে জলবায়ু পরিবর্তন একেবারে ঘাড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতেই এগিয়ে আসছে তরুণ প্রজন্ম। আতঙ্কিত হওয়ার সময় এটা নয়। বরং পরিস্থিতি মোকাবিলার কথাই ভাবতে হবে এখন। কপ-২৬ সম্মেলনে সেই বার্তাই দিল বিনিশা উমাশঙ্কর।