খালি হাতেই বিষাক্ত মৌমাছিদের ‘উদ্ধার’ করেন এই তরুণী!

বাড়ির পাশেই বাসা বেঁধেছে মৌমাছি। সারাক্ষণ ভনভন শব্দ তো রয়েছেই। সেইসঙ্গে রয়েছে হুল ফোটানোর আশঙ্কা। তবে মৌমাছিদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজও তো সহজ নয়। কিন্তু আপনাকে অবাক করে দিতে পারেন টেক্সাসের এরিকা থম্পসন (Erica Thompson)। বাড়ি বাড়ি ঘুরে মৌমাছিদের উদ্ধার করেন এরিকা। তারপর তাদের জন্য পৃথক বাসা তৈরি করে দেন নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমন কাজ অনেকেই করেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে থাকে নানারকম সুরক্ষা সামগ্রী। গোটা হাত ঢাকা থাকে দস্তানায়। এরিকার সেসব কিছুই দরকার হয় না। খালি হাতেই তিনি মৌমাছিদের (Bee) বাক্সবন্দি করেন। মৌমাছিরাও যেন বুঝতে পারে, এরিকা তাদের কোনো ক্ষতি করবেন না।

কয়েক বছর একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেছেন এরিকা। কিন্তু মৌমাছিদের প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে সেই কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। প্রথম প্রথম আশেপাশের অঞ্চল থেকেই মৌমাছি উদ্ধার করতেন তিনি। ২০১৯ সাল থেকে এই কাজেই সারাদিন কাটিয়ে দেন। ‘টেক্সাস বি-ওয়ার্কস’ নামে একটি সংস্থাও তৈরি করেছেন তিনি। মৌমাছি উদ্ধারের পাশাপাশি আগ্রহী ব্যক্তিদের মৌমাছি উদ্ধারের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় এই সংস্থায়। আর এরিকার যাবতীয় রোজগারও হয় সেই প্রশিক্ষণ থেকেই। মৌমাছি উদ্ধারের জন্য তিনি কোনো মজুরি নেন না। এমনকি অন্যান্য উদ্ধারকারীরা যেভাবে মধু সংগ্রহ করে বিক্রি করে, তাও করেন না এরিকা। ভালোবাসার টানেই তিনি ছুটে যান এই কাজে।

এরিকা যেন মৌমাছির ভাষা বুঝতে পারেন। তাই কখন তাদের গায়ে হাত দিলেও হুল ফোটাবে না, সেটাও বোঝেন তিনি। অবশ্য সবসময় হাতে তেমন সময় থাকে না। তাই একান্তই যদি মনে হয়, মৌমাছিদের মেজাজ ভালো নেই, তখন হাতে দস্তানা পরে নেন তিনি। তবে বেশিরভাগ সময় কাজ করেন খালি হাতেই। মৌমাছিদের উদ্ধার করার পাশাপাশি তাদের মৌচাকগুলিও যতটা সম্ভব অক্ষত অবস্থায় সংগ্রহ করেন। এরিকার মতে, তাদের পরিশ্রমে তৈরি এই বাসা নষ্ট করে দেওয়ার কোনো অধিকার মানুষের নেই। শুধু মানুষের বসতি অঞ্চলে চাক বাঁধলে মানুষের মনেও যেমন আতঙ্ক ছড়ায়, তেমনই মৌমাছিরাও বিপন্ন হয়। তাই উভয় পক্ষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই সেই বাসা আলাদা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটুকু করেন তিনি।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মৌমাছির বৈচিত্র্য আরিজোনার মরুপ্রান্তরে!