ব্যাকটেরিয়ার আচরণের সঙ্গে সাদৃশ্য পদার্থবিদ্যার তরল স্ফটিকের, অবাক গবেষকরা

ব্যাকটেরিয়া কিংবা অণুজীব মূলত জীববিদ্যা চর্চারই অংশ। কিন্তু এবার পদার্থবিদদেরও ভাবিয়ে তুলল মিক্সোকক্কাস জ্যান্থাস নামের একটি রড-আকৃতির অণুজীব। অনাহারে থাকার সময় স্থানপরিবর্তন করে এই ব্যাকটেরিয়া। পাশাপাশি আশ্চর্যজনকভাবে তৈরি করে গম্বুজাকারের বহুতল এক আণবিক কাঠামো। কিন্তু এই কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে লুকিয়ে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান। তারই অনুসন্ধান শুরু করলেন গবেষকরা।

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদদের এই গবেষণা সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে নেচার বিজ্ঞান পত্রিকায়। জ্যান্থাস ব্যাকটেরিয়া কলোনির অদ্ভুত গতিপ্রকৃতির পর্যবেক্ষণেরই কাজ চলছিল মূলত। কনফোকাল মাইক্রোস্কোপে লেজার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে দেখা হচ্ছিল কলোনির গঠন। আর সেখানেই চমকে ওঠেন বিজ্ঞানীরা। ব্যাকটেরিয়া কলোনির এই পরিকাঠামো ও গতিশীলতা যেন হুবহু মিলে যাচ্ছে পদার্থবিদ্যার সঙ্গে। অ্যাক্টিভ নেমেটিক লিকুইড ক্রিস্টালের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ এই আচরণ।

সক্রিয় নেমেটিক স্ফটিক এমনই একধরণের উপাদান, যাতে স্ফটিকের কণাগুলি পরপর সুসজ্জিত হয়ে নিজেরাই চলনে সক্ষম হয়। ব্যাকটেরিয়াগুলির মধ্যেও একই ধরণের ঘটনা দেখা গেছে বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের। তাঁদের তত্ত্ব অনুযায়ী, এক বিশেষ ধরণের যৌগের অণু তৈরি করে জ্যান্থাস। যা তাদের দেহের শুরু প্রান্ত থেকে নির্গত হয়ে ক্রমাগত পরিচলন করতে থাকে দেহের শেষ পর্যন্ত। যা কোনো তলের ওপর ঘর্ষণ বল তৈরি করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।

তবে অনাহারে না থাকলে এমন অদ্ভুত চরিত্র দেখা যাচ্ছে না ব্যাকটেরিয়াগুলির। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের দেহ কোষের স্তরে একধরণের টপোলজিক্যাল ঘটনা দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ক্রমাগত সেই কোষপ্রাচীরে জন্ম নিচ্ছে কিছু সূক্ষ্ম ছিদ্র। আবার মুহূর্তেই মিলিয়ে যাচ্ছে তারা। এই ঘটনার কোনো ব্যাখ্যাই দিতে পারেননি গবেষকরা। এই বিষয়ে যে আরও বিস্তারিত গবেষণা দরকার, তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ডঃ রিচার্ড অ্যালার্ট…

Powered by Froala Editor

More From Author See More