অন্য অনেক মানুষের মতোই তার মুখের সামনে খাবার এগিয়ে দিয়েছিল কেউ। আর বিশ্বাস করে সেই আনারস মুখে তুলতেই ঘটল দুর্ঘটনা। তার মধ্যেই যে ভরা ছিল বাজি-পটকা। ঠিক এভাবেই মৃত্যু হল একটি হাতির। সম্প্রতি এমনই অমানবিক ঘটনার বিবরণ শুনে স্তম্ভিত সারা দেশ। আততায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদেও সরব হয়েছেন মানুষ। তবে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বনবিভাগের একজন অফিসার।
২৭ মে কেরালার সাইলেন্ট ভ্যালি ফরেস্টের ঘটনা সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে ছড়িয়ে পড়তেই সামনে এল আরও একটি ঘটনার কথা। এটি ঘটেছে আগের মাসে, অর্থাৎ এপ্রিলে। কেরালার কোল্লাম জেলার পাঠানপুরম ফরেস্ট রেঞ্জে আহত অবস্থায় পাওয়া যায় একটি হাতিকে। তার অবস্থা তখন বেশ শোচনীয়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কোনো খাবার খেতে পারেনি সে। মুখের ভিতরে বিস্ফোরণের ঘা তখন বীভৎস চেহারা নিয়েছে। এমন অবস্থায় দলছুট হয়ে পড়ে হাতিটি। বনবিভাগের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন লাভ হয়নি। এক্ষেত্রেও একটু একটু করে যন্ত্রণা সহ্য করে মৃত্যু স্বীকার করতে বাধ্য হয় অবোধ প্রাণীটি। এবং এক্ষেত্রেও আততায়ীর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
ভারতবর্ষের বিপন্ন বনভূমির ততোধিক বিপন্ন অলঙ্কার এখানকার হাতি। এমন একটি প্রাণীর উপর এই অমানবিক এবং নৃশংস আক্রমণকারীর শাস্তির দাবি উঠেছে সারা দেশজুড়ে। কেরালার বনমন্ত্রী কে রাজু দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন ইতিমধ্যে। তবে এক্ষেত্রে অপরাধীকে শনাক্ত করা বেশ কঠিন ব্যাপার বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা। একটি হাতির দল একদিন কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। ফলে ঠিক কোথায় এই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তাও নিঃসংশয় হয়ে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা, সে-বিষয়েও স্পষ্ট উত্তর নেই। এখন উপায় শুধু সচেতনতা গড়ে তোলা। ভবিষ্যতে আর কোনো অবলা প্রাণীর সঙ্গে কোনো মানুষ যেন এমন আচরণ না করে, সেটুকুই নিশ্চিত করতে হবে এখন।
Powered by Froala Editor