পুরুষ হয়েও সন্তান প্রসব, মাতৃত্বের অনুভূতিতে আচ্ছন্ন তিন সন্তানের ‘জননী’

সি-হর্সদের মধ্যে একটি অদ্ভুত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। স্ত্রী ও পুরুষ মিলিত হবার পর স্ত্রী সি-হর্স ডিম প্রসব করে। কিন্তু সেই ডিমগুলো লালন করা, উত্তাপ বজায় রাখা, খেয়াল রাখা— যাবতীয় দায়িত্ব তখন আর সে নেয় না। সেই মাতৃত্বের গুরুদায়িত্ব তখন নেয় পুরুষ সি-হর্সটি। নিজের থলির মধ্যে রেখে ডিমগুলোকে বাড়তে দেয়; পুরুষ হয়েও তখন সে হয়ে যায় মায়ের মতো। তার ‘গর্ভ’ থেকেই সন্তানরা সমুদ্রের আলো দেখে…

পুরুষদের মধ্যেও মাতৃত্বের পরশ থাকে। শুধু সি-হর্সদের মধ্যেই কি সেই স্বপ্ন বেড়ে ওঠে? মানুষের মধ্যে থাকে না? সেই কথাই বলছেন ইউভাল টপার-ইরেজ। তিনি নিজেই যে সেই মাতৃত্বের স্পর্শ পেয়েছেন। একবার নয়, তিন তিনবার। সমাজের সমস্ত উপেক্ষাকে সরিয়ে রেখে তিনি জন্ম দিয়েছেন সন্তানের। উপেক্ষা কেন? তিনি যে পুরুষ! আর সেভাবেই তিনি বেড়ে উঠতে চান।

ইউভাল একজন সমকামী পুরুষ। প্রেম করেছেন, বিয়েও করেছেন মাটান টপার-ইরেজ’কে। কিন্তু সবই তো হল, তিনি কি মা হতে পারবেন? ঠিক যেমনভাবে একজন নারী শিশুর জন্ম দেয়, তিনিও কি দিতে পারবেন? একবিংশ শতকের অত্যাধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান সেই সুযোগ করে দিল ইউভাল-কে। সিজার নয়, সরাসরি বাচ্চা প্রসব করার পদ্ধতির মধ্যে দিয়েই গিয়েছেন তিনি। প্রথমবার মিসক্যারেজ হলেও, পরের তিনবারই সুস্থ ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। আজ ইউভাল-মাটানের কোলে বেড়ে উঠছে ওরা।

মাতৃত্বের এই অনুভূতি যে পুরুষও পেতে পারে, তিনিও পেতে পারেন, এটা ভাবতেই পারেননি ইউভাল। কিন্তু যখন হল, সেটা মধুর পূর্ণতা পেল। সমাজে কে কী বলল, তাতে অবশ্য কিছু এসে যায় না। আন্দোলন তো থেমে নেই। এভাবেই ইউভালরা এগিয়ে যাবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই মুহূর্তের ছবি শেয়ার করার সময়ও এমন কথাই বলেছেন তিনি। এই অনুভূতি ছুঁয়ে থাকা, এই সুন্দর ছবি দেখা— এটা স্বর্গের থেকে কি কোনো অংশে কম!

ছবি ঋণ - তারা লিচ

More From Author See More