সমস্ত পৃথিবীর কাছে এই মুহূর্তে ভগবানের আসনে উঠে এসেছেন ডাক্তাররা। মহামারীর হাত থেকে বাঁচতে তাঁরাই তো একমাত্র ভরসা। অথচ ল্যাটিন আমেরিকার এই ছোট্ট গ্রামটির দিকে তাকালে যে ছবিটা দেখতে পাওয়া যাবে, সেটা পৃথিবীর বাকি এলাকার সঙ্গে মেলে না একেবারেই। আমাজন অববাহিকায় অবস্থিত পেরুর ছোট্ট গ্রাম শিপিবো। জঙ্গলকে আশ্রয় করেই বাস উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রায় ৭০০ মানুষের। অথচ তাঁদের কারোর জন্যই নেই কোনো চিকিৎসক। অসহায় গ্রামবাসীদের একমাত্র ভরসা একজন নার্স। আর এর মধ্যেই গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন কোভিড-১৯এ।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলির মধ্যে প্রথম লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পেরু সরকার। অথচ ১৬ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হলেও বিভিন্ন অঞ্চলের পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। আর এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত থেকেছে উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলি। শিপিবো গ্রামের একজন সরকারি ডাক্তার করোনা সংক্রমণের কথা জানতে পেরেই গ্রাম ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন। গ্রামবাসীদের কথায়, সরকারও কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না। এগিয়ে আসছে না স্থানীয় প্রশাসনও। আর এরকম পরিস্থিতিতে একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নার্স ইলিয়াস। প্রতিটা মুহূর্তে সংক্রমণের আশঙ্কা ঘিরে ধরছে। নেই উপযুক্ত সুরক্ষা পরিকাঠামো। তবুও অসহায় গ্রামবাসীদের ছেড়ে যেতে নারাজ তিনি। জানিয়েছেন, যতদিন তিনি নিজে আক্রান্ত না হচ্ছেন, ততদিন লড়াই চালিয়ে যাবেন।
করোনা সংক্রমণ রুখতে পেরু সরকারের পদক্ষেপ সমালোচনার মুখে পড়েছে একাধিকবার। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, একদম সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অথচ তাতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ দেখা দেয়নি। এর মধ্যেই ইলিয়াসের মতো মানুষ তৈরি করছেন অন্য ধরনের উদাহরণ। মানুষের ঐক্য আর সহযোগিতায় আজও বিশ্বাস বাঁচিয়ে রাখেন এনারাই।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শিকারের জন্যে হাজার হাজার সিংহ পালিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য