ভারতে শেষ আটদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় পাল্লা দিয়েই বাড়ছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও ৩০ হাজারেরই বেশি। সিঁদুরে মেঘের আশঙ্কা সবার মনে মনে ঘুরলেও সরকারিভাবে কিছুই এতদিন প্রকাশ করেনি প্রশাসন। শেষমেশ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ আইএমএ-এর চেয়ারম্যান স্বীকার করলেন কমিউনিটি স্প্রেডিং-এর কথা।
গোষ্ঠী সংক্রমণ বা কম্যিউনিটি স্প্রেডিং-এর বিষয়ে বারবার প্রশাসন এবং আইসিএমআর বলছিল সেই জায়গায় এখনও পৌঁছয়নি ভারত। বরং নিয়ন্ত্রণেই আছে ভারতের পরিস্থিতি। গণ সংক্রমণ হওয়ার জন্য আঞ্চলিক গোষ্ঠীর মধ্যে যে পরিমাণ আক্রান্ত হওয়া দরকার, তা থেকে এখনও বেশ খানিকটা দূরেই ভারতের অবস্থান। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কথা এদিন বেশ খোলসা করেই জানালেন আইএমএ-এর চেয়ারম্যান ডঃ ভি.কে. মঙ্গা। ইঙ্গিত দিলেন, দেশের অবস্থা ইতিমধ্যেই শোচনীয়। শুরু হয়ে গেছে কমিউনিটি স্প্রেডিং। আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসতে চলেছে আগামীতে, সতর্ক করলেন তিনি।
মঙ্গা জানান, ভারতে সংক্রমণ শহরাঞ্চল থেকে আসতে আসতে গ্রাম এবং মফস্বলগুলিতেও ছড়িয়েছে। চেন্নাই কিংবা মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ বস্তিতেই আক্রান্ত মিলছে করোনার। সেই সংখ্যাটাও মোট মিলিয়ে বেশ কয়েক হাজারে গিয়ে পৌঁছেছে। দিল্লির করোনা লড়াইয়ের কথা বারবার উদাহরণ স্বরূপ রাখা হলেও দেশের বাস্তব চরিত্র তা নয়। শহরের মত গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় বা পরিকাঠামো না থাকায় সেখানকার পরিণত হতে চলেছে ভয়ংকর।
ডঃ মঙ্গা রাজ্য সরকারগুলিকে প্রয়োজনে কেন্দ্রের কাছে দ্বারস্থ হওয়ার অনুরোধ করেন। পাশাপাশি তিনি অনুরোধ করেছেন টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর জন্যেও। এখন সারা দেশের মোট পরীক্ষার সংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লক্ষ। ৮৮৫টি সরকারি ও ৩৬৮টি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে চলছে টেস্টিং। কিন্তু তা সত্ত্বেও সংক্রমণের ভিত্তিতে তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন মঙ্গা।
ইতিমধ্যেই করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘কো-ভ্যাকসিন’-এর মানব শরীরে প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন হাতে আসতে আসতে আরো কয়েক লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছেন তিনি। তবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ সফল হলেও তার প্রভাবে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে মাত্র ৩ মাসের জন্য। তাতেও যে কতটা লাভ হবে বলা মুশকিল। বরং তিনি জানাচ্ছেন ভাইরাসের সংস্পর্শে এসে ৭০ শতাংশ মানুষ স্বাভাবিকভাবেই তৈরি করতে পারেন ইম্যিউনিটি। যা একমাত্র ক্ষীণ আশার আলো জাগাচ্ছে এখনও...
Powered by Froala Editor