একটি কবিতা। তার থেকেও স্পষ্ট করে বললে, কবিতাটির একটি লাইন। সেটার ‘ধর্ম’ কী? সেটা কী হিন্দুত্বের বিরোধী? অবাস্তব কথা মনে হলেও, এই পরিস্থিতিতে ভারতে সেই জিনিসটাই ঘটল। সম্প্রতি আইআইটি কানপুর একটি বিশেষ কাজের জন্য অভিজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছে। ‘কাজ’টি কী? উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ-এর একটি কবিতা ‘অ্যান্টি-হিন্দু’ কিনা, সেটা ঠিক করতে হবে। আর এমন ঘটনায় তাজ্জব বনে গেছেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
‘হাম দেখেঙ্গে, লাজিম হ্যায় কি হাম ভি দেখেঙ্গে’— আহমেদ ফয়েজের এই কবিতাটি এখন গানপয়েন্টের মুখে। কবিতাটির শেষ লাইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কানপুর আইআইটি। “সব তখত গিরায়ে জায়েঙ্গে, বাস নাম রাহেঙ্গা আল্লাহ কা। হাম দেখেঙ্গে”— এই লাইনটির দিকেই আঙুল তুলেছেন তাঁরা। বাংলায় বললে দাঁড়ায়, “যখন সিংহাসনের পতন হবে, তখন শুধুমাত্র আল্লাহ’র নাম থাকবে।” লাইনটি হিন্দুত্বের সঙ্গে যায় কিনা, সেই নিয়ে বসেছে একটি বিশেষ প্যানেল। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্টজনরা। আইআইটি’র মতো একটি প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন কাজ স্বভাবতই স্তম্ভিত করেছে বাকিদের। তাহলে কি কবিতার ওপরেও চালানো হবে হিন্দুত্বের বেড়াজাল? একটি শব্দের ওপর ভিত্তি করে তার ‘ধর্ম’ নির্ধারণ করা হবে? তার থেকেও বড় প্রশ্ন, সাহিত্যের কি সত্যিই কোনও ধর্ম হয়?
এইরকম আরও প্রশ্ন উঠে আসছে বিগত কয়েকদিন ধরে। প্রসঙ্গত, এনআরসি-সিএএ বিরোধী মিছিলে কানপুর আইআইটি’র পড়ুয়ারা এই কবিতাটিকে শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তারই প্রত্যুত্তরে এই সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন পড়ুয়ারা।