সন্দেহের কথা জানানো হয়েছিল আগেই। আর সেই বক্তব্যের সমর্থনে এবার সেরো সার্ভের সামগ্রিক রিপোর্ট প্রকাশ করল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। রিপোর্ট বলছে, ভারতে করোনা সংক্রমণের চেহারাটা আমাদের জানা সংখ্যার চেয়ে অনেকটাই বেশি। ঠিক কতটা বেশি? মে মাস পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বলছে দেশের ০.৭৩ শতাংশ মানুষ করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন। অর্থাৎ সংখ্যাটা কোনোভাবেই ৬৪ লক্ষের কম নয়।
দেশের সমস্ত মানুষের উপযুক্ত করোনা পরীক্ষার মতো পরিকাঠামো এখনও গড়ে তোলা যায়নি। আর তাই অজানাই থেকে যাচ্ছে অনেক রোগীর তথ্য। আইসিএমআরের সমীক্ষা অনুযায়ী একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেলে গড়ে ৮০ জনের উপর রোগীর সংক্রমণ ধরা যাচ্ছে না। এর ফলেই আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ।
অবশ্য মে মাসের চেয়ে এখন দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। ফলে এখন এই অনুপাত অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন ৫০ জনের গবেষণা দলটি। তবে প্রয়োজন মতো পরীক্ষা এখনও হচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
দেশের ২৮টি রাজ্যের ৭০টি জেলায় এলিজা পদ্ধতিতে র্যা পিড টেস্টের মাধ্যমে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন আইসিএমআরের ৫০ জন বিজ্ঞানী। সামগ্রিকভাবে দেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর, সেটা এই খণ্ডচিত্র থেকেই আন্দাজ করা যায়। এমনকি লকডাউন পুরোপুরি ব্যর্থ না হলেও তার সাফল্য যে খুবই নগণ্য, সেটাও বুঝতে অসুবিধা হয় না। অন্যদিকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্ত্যুর হিসাবেও মে মাস পর্যন্ত ভারত অনেক দেশের থেকেই এগিয়ে ছিল বলে জানা যাচ্ছে। হিসাব অনুযায়ী এই অনুপাতটি ০.১৮ শতাংশ। তবে এদেশে পরীক্ষার হার এতটাই কম যে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ঠিক কতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন সেটা বোঝা মুশকিল। প্রকৃতপক্ষে আরও অনেক মানুষ করোনায় মারা গিয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন
দুর্গাপুজো হোক ডিসেম্বরে, করোনা-পরিস্থিতিতে প্রস্তাব নেট নাগরিকদের একাংশের
প্রতিদিন করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বমুখী গ্রাফ দেখে চিন্তা যতই ঘনীভূত হোক, শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে হয় যে সংক্রমণ আড়ালে থাকার চেয়ে এটা অনেক ভালো। করোনা ভাইরাসকে আটকাতে গেলে আরও বেশি করে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। আর সেই ব্যবস্থা যেমন সরকারকে করতে হবে, তেমনি পরীক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ মানুষকে। বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ এবং প্রয়োজনীয় সচেতনতাই পারে এই দুঃসময়ে পথ দেখাতে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
আড়াই মিনিটেই শনাক্ত করা যাবে করোনা, চমক বাঙালি বিজ্ঞানীদের