করোনা সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম আরটিপিসিআর টেস্ট। চিকিৎসার প্রয়োজনে তো বটেই, ভ্রমণ বা অন্যান্য কারণেও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার উপরেই নির্ভর করার নির্দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। তবে সাম্প্রতিক সময়ের ঘাটতি মেটাতে এবার আরটিপিসিআর পরীক্ষার উপরেই নিয়ন্ত্রণ আনার নির্দেশ দিল ভারতের চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা আইসিএমআর। বুধবার এক নির্দেশিকায় আইসিএমআর জানায় এবার থেকে কোনো ব্যক্তির একবার সংক্রমণ নিশ্চিত হলে আর আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হবে না। পাশাপাশি উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও আরটিপিসিআর পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ সংস্থার।
ভারতে মোট আরটিপিসিআর পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ২৫০৬। সমস্ত কেন্দ্র মিলিয়ে দৈনিক ১৫ লক্ষ পরীক্ষা সম্ভব। কিন্তু সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে সমস্ত পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে অনেক সময় আতঙ্কের বশে মানুষ আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে আইসিএমআর। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংস্থার নির্দেশ, আরটিপিসিআরের বদলে এবার র্যাথপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে। এর ফলে সংক্রমণের সামগ্রিক চরিত্র বোঝা যায় না ঠিকই, কিন্তু এই জরুরি অবস্থায় আর কিছু করার নেই। কেবলমাত্র কোনো ব্যক্তির জ্বর ও সঙ্গে সর্দিকাশি বা পেশিযন্ত্রণা অথবা ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা গেলে তবেই আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হবে। তাও কেবলমাত্র একবার। এরপর চিকিৎসার প্রয়োজনেও র্যালপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপরেই নির্ভর করতে হবে।
আইসিএমআরের কেন্দ্রীয় নির্দেশের আগেই পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশ কিছু রাজ্য একইরকম নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে। পাশাপাশি ভ্রমণের প্রয়োজনে অনেকে নিশ্চিত হতে চাইছেন তাঁদের শরীরে সংক্রমণ ঘটেনি। এক্ষেত্রেও র্যা পিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এই নির্দেশ ঘিরে কিছুটা সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিশেষত অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে উপসর্গহীন ব্যক্তিদের শরীরেও কোভিড সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। তাছাড়া আরটিপিসিআর পরীক্ষার সুযোগ না থাকলে চিকিৎসকরা অনেক ক্ষেত্রে অনুমানের ভিত্তিতে চিকিৎসা করতে বাধ্য হবেন। তার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে অতিমারী যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে প্রতিদিন পরীক্ষার জন্য চাপ বাড়ছে। এত দ্রুত পরিকাঠামো বাড়ানো সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে আইসিএমআর। তাই আপাতত মন্দের ভালো হিসাবেই এই ব্যবস্থা বেছে নেওয়া হয়েছে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনার পর আরও এক চিনা ভাইরাস, ছড়াতে পারে মহামারীও : আইসিএমআর