অরণ্যের মাঝ দিয়ে ঝিক ঝিক শব্দ তুলে এগিয়ে যাচ্ছে রেলগাড়ি। আর তার মধ্যে বসে যাত্রীরা মুখ বাড়িয়ে দিয়েছেন জানলা দিয়ে। কিন্তু সাধারণ রেলগাড়ির ছোটো ছোটো জানলা দিয়ে আর কতটুকুই বা দেখতে পাওয়া যায়? এবার ডুয়ার্সের বুক দিয়ে তাই ছুটে যেতে চলেছে অত্যাধুনিক ভিস্তাডোম কোচ। এই নতুন ধরনের কামরার দুপাশে বড়ো বড়ো কাচের জানলা। এমনকি কামরার ছাদও কাচের তৈরি। ফলে মাথা তুলে দেখা যাবে আকাশও। আর কয়েক মাসের মধ্যেই এই নতুন পরিষেবা চালু করতে চলেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। আপাতত দুটি পৃথক রুটে চালু হবে পরিষেবা।
ব্রিটিশ ভারতে তো বটেই, স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর পরেও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের আয়ের অন্যতম উৎস ছিল পর্যটন শিল্প। কিন্তু এখন কিছু দূরপাল্লার ট্রেন চললেও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চাহিদা ক্রমশ কমে আসছে। অরণ্যের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর জন্য যাত্রীরা এখন জিপ বা বাসেই যাতায়াত করেন। নতুন ধরনের এই রেলের কামরা অনেক পর্যটককেই আকর্ষণ করবে বলে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ। আপাতত শিলিগুড়ি জংশন থেকে সেবক হয়ে আলিপুরদুয়ার স্টেশন পর্যন্ত রেলপথে এবং আসামের লুমডিং-বদরপুর রেলপথে চালু হবে এই পরিষেবা। প্রতিটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে থাকবে দুটি করে ভিস্তাডোম কোচ।
গতবছরই এই অভিনব রেলকামরার মডেল বাজারে নিয়ে আসে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই কামরার জন্য অর্ডার দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। বড়ো জানলা এবং কাচের ছাদের পাশাপাশি এর আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিটি সিট ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যায়। পর্যটনশিল্পের কথা মাথায় রেখেই এই ধরনের কামরা তৈরি করা হয়েছে। শুধু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে নয়, দার্জিলিং-হিমালয় রেলওয়ে থেকেও আটটি কামরার অর্ডার দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে আগামী আগস্ট মাস থেকেই পরিষেবা শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছে। আগামী মাসেই এসে যাবে কামরাগুলি। তারপর চাপরা, মহানন্দা, বক্সা হয়ে জলদাপাড়া আর গরুমারা অরণ্যের গা বেয়ে ছুটে যাবে অত্যাধুনিক এই রেলকামরা। নূন্যতম টিকিটেই যাত্রা করতে পারবেন আপনিও। শুধু তার জন্য অতিমারী সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার অপেক্ষা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মিউজিয়াম না অনুষ্ঠানবাড়ি? হাওড়ার রেল জাদুঘরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়