শুকনো পাথুরে মাটিতে ছড়িয়ে আছে শয়ে শয়ে হাড়। রীতিমতো বধ্যভূমির মতোই ফুটে উঠেছে সেই দৃশ্য। কিন্তু এই হাড় তো মানুষের নয়। সাম্প্রতিক সময়ের বলেও হচ্ছে না। তাহলে? সম্প্রতি রাশিয়ায় উদ্ধার হল এমনই বিশাল প্রাগৈতিহাসিক স্থান। যেখানে একসঙ্গে ৬০টি ম্যামথের হাড় পাওয়া গেল। এই আবিষ্কারই আবারও অবাক করছে গবেষকদের।
আরও পড়ুন
গুয়েতেমালার গৃহযুদ্ধে তারা ‘নিখোঁজ’, পড়ে আছে কয়েকটি বেওয়ারিশ হাড়
আজ থেকে অন্তত ২৫ হাজার বছর আগে থেকে এই জায়গাটি তৈরি করা শুরু হয়। প্রাচীন মানুষরা বিশাল ম্যামথ শিকার করে, এখানে জমিয়ে রাখত তাদের হাড়। সম্প্রতি ‘অ্যান্টিকুইটি’ জার্নালে রাশিয়ার এই জায়গাটির সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। ২০১৪ সালে এরকম একটি জায়গার অস্তিত্ব প্রথমবার জানেন ঐতিহাসিকরা। পরে ২০১৫ থেকে দীর্ঘ তিন-চার বছর ধরে খননকার্য চলে। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী, আইস এজ বা বরফ যুগের সময় থেকেই এই জায়গাটি তৈরি করা হচ্ছিল। অন্তত ৬০টি ম্যামথের হাড় এই পুরো জায়গা জুড়ে পাওয়া গেছে। তাঁদের ধারণা, এগুলোকে সংগ্রহ করে একসঙ্গে জড়ো করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
হ্রদে ভেসে আছে শয়ে শয়ে মানুষের হাড়!
এর আগেও রাশিয়ায় ‘ম্যামথ হাউজ’ পাওয়া গিয়েছিল। ষাট-সত্তরের দশকে এরকম জায়গার সন্ধান পেয়েছিলেন ঐতিহাসিকরা; কিন্তু তুলনায় বেশ ছোটোই ছিল। কিন্তু এরকম বিশাল আকারের জায়গা কখনও পাননি। হিসেব অনুযায়ী, এই নতুন জায়গাটি এখনও অবধি সবচেয়ে বড়ো ও প্রাচীন। কিন্তু এগুলো ঠিক কী কাজের জন্য রাখা হয়েছিল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। ম্যামথের হাড় তুলনায় অনেক মজবুত হয়। তাহলে কি এগুলো দিয়ে কোনো বড়ো ঘর তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল? এছাড়াও আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, পুরো জায়গায় হাড়গুলি বৃত্তাকারে ছড়ানো। তাহলে কি কোনো ধর্মীয় আচারের জন্য এটা করা হয়েছিল? কোনটাই এখনও স্পষ্ট নয় বিজ্ঞানীদের কাছে। গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সেইদিকেই তাকিয়ে আছে সবাই…