একজন আইএএস অফিসার হতে গেলে ঠিক কতটা পরিশ্রম আর কোন পর্যায়ের মেধা দরকার, সেটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। দিন রাত এক করে পড়াশোনা করার পর একজন তরুণ বা তরুণী তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছন। অত বড়ো একটা পদের দায়িত্বে যিনি থাকেন, তাঁর বোর্ডের পরীক্ষার নম্বরও নিশ্চয়ই চমকপ্রদ হবে! এমনই ধারণা হয়তো আমাদের। কিন্তু নম্বর যে কারোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না, এমন কথাটাই অনেকের মতো আবারও বললেন আইএএস অফিসার নিতিন সাঙ্গওয়ান। প্রমাণস্বরূপ হাজির করলেন তাঁর মাধ্যমিকের বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট, যা দেখে সাধারণ পড়ুয়ারাও একবার নিজেদেরকে ভাবাতে পারেন।
বিগত কয়েকদিনের মধ্যে আইসিএসসি, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ-সহ বহু বোর্ড দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ফল প্রকাশ করেছে। করোনার মরসুমে আবারও সামনে এসেছে সেরা পড়ুয়াদের চওড়া হাসি। সেই সঙ্গে আছে আরও হাজার হাজার পড়ুয়া, যারা পাশ হয়ত করেছেন; কিন্তু অত বিশাল নম্বর পাননি। তাঁরা কি কিছুই করতে পারবেন না? একদমই তা নয়, বলছেন নিতিন সাঙ্গওয়ান। বোর্ড পরীক্ষায় কিছু নম্বর কম পাওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু সেটাই আসল নয়। উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন নিজেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে দিয়েছেন নিজের দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষার শংসাপত্র। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নিতিন রসায়নে পেয়েছেন মাত্র ২৪! আর পদার্থবিদ্যায় মাত্র ৩৩! যাকে বলে কোনোমতে পাশ করা!
আর আজ? এই দিনে দাঁড়িয়ে নিতিন সাঙ্গওয়ান একজন সফল আইএএস অফিসার। আমদাবাদ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ডেপুটি মিউনিসিপাল কমিশনার তিনি। সেই সমস্ত নম্বর, রেজাল্ট, দিন পেছনে ফেলে এগিয়ে এসেছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রমই আজ তাঁকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেই তিনি লিখেছেন, এই রেজাল্টই জীবনের শেষ নয়। জীবন এর থেকে আরও কয়েক গুণ বড়ো! বহু সুযোগ আসবে, তার থেকেও বেশি আসবে ব্যর্থতা। সবকিছুকে পেরিয়ে শিখরে পৌঁছে যাওয়ার নামই তো জীবন! সেই অ্যাডভেঞ্চারে যেতে গেলে একটা দুটো পরীক্ষাতেই তো থেমে গেলে চলবে না! ভালো ফল হোক বা খারাপ, ফুলস্টপ নৈব নৈব চ। নিতিন সাঙ্গওয়ানের জীবনও সেই কথাই তো বলে…
Powered by Froala Editor