বাঘ সিংহ হোক বা অন্য শিকারি প্রাণী, এদের হাত থেকে বাঁচার জন্য জঙ্গলের পশুপাখির আছে একটি নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী। খানিকটা গুপ্তচরের মতো কাজ করে অনেক প্রাণী বাকিদের সতর্ক করে দেয়। কিন্তু একটি শিকারি প্রাণীই আরেক শিকারীর অনুপ্রবেশের সংকেত দেয় কি? পশুপাখির ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে এটা খানিকটা আশ্চর্য ঘটনা। আর এমন আশ্চর্য ঘটনাই দেখা গেল কর্নাটকের জঙ্গলে।
ধোলে একধরনের শিকারি কুকুর। দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গলে এই কুকুরের দেখা মেলে। কর্নাটকের জঙ্গলে এই কুকুরের ব্যবহারই অবাক করেছে বিশেষজ্ঞদের। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বাঘের তারা খেয়ে জঙ্গলের আশেপাশে এসে এই কুকুর চিৎকার করে বাকিদের সতর্ক করে দিচ্ছে। ভিডিওটি হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ করে 'ফাইভ-জিরো সাফারি' নামের একটি ভ্রমণ কোম্পানি। তারপর সেটি ট্যুইটারে আপলোড করেন এক ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার। কুকুরটির এমন অবাক করা ব্যবহার স্বাভাবিকভাবেই নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। তার এমন ব্যবহারের নানা সম্ভাব্য কারণের দিকেও দৃষ্টিপাত করেছেন অনেকে।
ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস অফিসার সুশান্ত নন্দের ধারণা, এই ধোলের দলের বাকিরা অথবা তার শাবকরা আশেপাশে কোথাও ছিল। তাদের সতর্ক করার জন্যই এই সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছিল কুকুরটি। আবার অনেকের মতে কুকুরটি তার নিকট আওয়াজ দিয়ে বাঘকে ভয় পাইয়ে দিতে চাইছিল। তবে এই বিচিত্র ব্যবহারের সঠিক কারণ জানতে যথেষ্ট গবেষণার প্রয়োজন।
একসময় দক্ষিণের জঙ্গলের অতি পরিচিত বন্য কুকুর ধোলে, বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম বিপন্ন প্রাণীদের একটি। কিছুদিন আগে লকডাউনের মধ্যেই আবার দেখা মেলে এই প্রাণীটির। সুশান্ত নন্দ সেই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেন। লকডাউনের মধ্যে আরও অনেক প্রাণীর খবর তিনি নিয়মিত প্রচার করে চলেছেন। এই বিরল প্রাণীটির আবার দেখা পেয়ে খুশি হয়েছিলেন পরিবেশপ্রেমী মানুষরা। আর তারপরেই প্রকাশ্যে এলো এই অদ্ভুত চরিত্র। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমানে বহু মানুষের আলোচনার বিষয় এই বন্য কুকুর ধোলে।