গৃহবন্দিরা ‘একা’ নন, সাহায্যের জন্য ২৫০টি স্বেচ্ছাসেবী দল ইংল্যান্ডে

করোনার আতঙ্কে গৃহবন্দি বহু মানুষ। কারো শরীরে বাসা বেঁধেছে ভাইরাস, কারো মনে ভয়। ঘর থেকে বেরোতে সাহস পাচ্ছেন না তাঁরা। যদি তাঁদের শরীর থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ মানুষের শরীরে? ইংল্যান্ডে এমন অনেক মানুষ স্বেচ্ছায় কোয়ারান্টাইনে আছেন। তাঁদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেমন আছেন তাঁরা? কেমন কাটছে সারাদিন?

আরও পড়ুন
সেরে উঠেছেন লক্ষাধিক মানুষ, করোনা-আক্রমণের বিপরীতে আশার আলো

মানুষকে বাঁচাতে স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছেন তাঁরা। অথচ কারোর ঘরে হয়তো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস শেষ। দোকানেও যেতে পারছেন না। কারোর আবার বাড়ির পোষা কুকুরটা ছটফট করছে, অনেকদিন যে তাকে নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তবে তাঁদের সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেখানকার তরুণরা। ইতিমধ্যে সারা ইংল্যান্ডে ২৫০টির কাছাকাছি স্বেচ্ছাসেবী দল তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেউ দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনে এনে দিচ্ছেন, কেউ পোষা কুকুরকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়। কেউ বা প্রেসকিপশন নিয়ে ছুটছেন ওষুধ আনতে। এভাবেই এক সামাজিক সম্পর্কের উদযাপনে মেতে উঠেছেন সবাই।

আরও পড়ুন
দুর্গতের জন্য রাস্তায় খাবারের প্যাকেট রেখে আসছেন মানুষ, মানবতার ছবি ইস্তাম্বুলে

যোগাযোগ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে। আর তারপরেই সশরীরে পৌঁছে যাচ্ছেন সাহায্য করতে। কিন্তু কেন এমন বিরল উদ্যোগ? আন্না ভিকারস্টাফ, ন্যাশনাল নেটওয়ার্কের একজন কো-অর্ডিনেটর। তাঁর মতে; ধর্ম, বর্ণ, জাতি, আর্থিক প্রতিপত্তি এই সবকিছুর থেকে বড় কথা আমরা প্রত্যেকেই মানুষ। আর অসুস্থতার সময়েই সেই উপলব্ধি হয় আমাদের। আর এই বিশ্বব্যাপী মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁরা কাউকেই একা ছেড়ে দিতে চান না। তাই এই নেটওয়ার্ক। যাতে লড়াইটা প্রত্যেকে একসঙ্গে লড়তে পারে।

আরও পড়ুন
ঘরে-ল্যাবরেটরিতেই তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সৌজন্যে কলকাতার ছাত্রসমাজ

তরুণদের এই উদ্যোগে খুশি ইংল্যান্ডের সাধারণ মানুষও। এনএইচএস বা অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করে উঠতে পারছে না। সেখানে তরুণদের এমন স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। আর মানবিকতার প্রকৃত চেহারার হদিশ তো পাওয়া যায় এমন আপদকালীন সময়েই। আশা করা যায় ইংল্যান্ডের এই তরুণরা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানবিক শক্তিকেই জয়যুক্ত করতে পারবেন।

More From Author See More