কীভাবে মহাকাশের বুকে ভেসে রয়েছ এতগুলো গ্রহ-নক্ষত্র? কেন তারা আকর্ষণ করে প্রত্যেককে? এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই আইনস্টাইন দিয়েছিলেন গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের ধারণা। বলেছিলেন, মহাকাশে বিছিয়ে রাখা আছে একটা অতি সূক্ষ চাদর। যার উপরে ভাসছে সমস্ত মহাজাগতিক বস্তু। কিন্তু আদৌ এমন কোনো চাদরের অস্তিত্ব আছে কিনা, তা প্রমাণ করে যেতে পারেননি। আজও বিজ্ঞানের কাছে সে এক রহস্য। তবে সম্ভবত এইবার তার উত্তর পাওয়া গেল। উত্তর আমেরিকার ন্যানোহার্ৎজ অবজারভেটরি ফর গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের গবেষকরা নিয়ে এলেন সেই চাদরের সন্ধান।
সম্প্রতি অবজারভেটরির রাডারে ধরা পরেছে এক এক অতি ক্ষীণ অথচ স্পষ্ট শব্দ। ঠিক যেন গুনগুন করে একটা সুর বেজে চলেছে। আর এই শব্দের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়েই সেই গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের ধারণায় গেলেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যদিও নিশ্চিতভাবে কিছু বলা হচ্ছে না, তবে এটিকে গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ সিগন্যাল বলেই মনে হচ্ছে। পাশাপাশি গবেষক সিমন পৃথিবীর সমস্ত মহাকাশ গবেষকদের এই গবেষণার কাজে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের সন্ধানে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ন্যানোগ্রেভ। এবার কি তাহলে সেই কাজে সাফল্য মিলল? গবেষকদের মধ্যে তাই যেন বেশ খানিকটা আনন্দের উচ্ছ্বাস। বহু দূরের পালসার থেকে অত্যন্ত অল্প সময়ের জন্য এসেছে শব্দটি। তবে তা যে কোনো যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে নয়, বাস্তব একটি শব্দ, সে-বিষয়ে নিশ্চিত তাঁরা। আর এই পথ দিয়েই যদি গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে ব্ল্যাক-হোল আবিষ্কারের পর আবারও এক যুগান্তর ঘটে যাবে মহাকাশ গবেষণার জগতে।
Powered by Froala Editor