এবার মঙ্গলগ্রহেও মিলল আবর্জনা। পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে মহাকাশেও শুরু হয়েছে দূষণ। মানব কৃত দূষিত পদার্থে ছেয়ে গিয়েছে অন্তরীক্ষ। প্রসঙ্গত এই বছরই সাগরের একদম তলদেশে মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা কিনা প্রবেশ করেছে মাছের দেহে। উত্তরমেরুর বরফের খাঁজে আটকে রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য। এমনকি মানুষের শরীরে, মাতৃগর্ভেও পাওয়া গিয়েছে প্লাস্টিকের নমুনা।
নাসার মঙ্গলযান ‘পার্সেভিয়ারেন্স’ বহুদিন চক্কর কাটছে মঙ্গলের আকাশে। মঙ্গলগ্রহের মাটিতে প্রাণের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে, ‘পার্সেভিয়ারেন্স’। কিন্তু তার ক্যামেরায় এযাবৎ জীবন্ত প্রাণী তো দূরে থাক, প্রাণের কোনো উৎসই ধরা পড়েনি। উল্টে, ধরা পড়েছে মানব উৎপাদিত বর্জ্য। দুটি পাথরের খাঁজে ‘পার্সেভিয়ারেন্স’ দেখতে পেয়েছে একখণ্ড রুপোলি পাতলা ফয়েল। কিন্তু এই ফয়েল পৌঁছল কীভাবে? এর জন্য দায়ী ‘পার্সেভিয়ারেন্স’ নিজেই। নাসার এই মঙ্গলযানটি ক্র্যাশ ল্যান্ড করার সঙ্গে সঙ্গে তার গা থেকে ছিটকে পড়েছিল একটুকরো ফয়েল। তবে এই ফয়েল ছাড়াও, মঙ্গলের একটি গর্তে পাওয়া গিয়েছে প্যারাশুটের টুকরো। ২০১২ সালে পাড়ি দিয়েছিল নাসার ‘কিউরিওসিটি’ নামক মঙ্গলযানটি। তার গা-থেকে ছিটকে আসা প্লাস্টিকের টুকরোও পাওয়া গিয়েছে এই গ্রহের মাটিতে।
তবে ভিনগ্রহের মাটিতে বর্জ্য ফেলে আসার ইতিহাস নতুন নয়। ১৯৭২ সালে, আ্যপোলো ভয়েজার পাড়ি দিয়েছিল চাঁদে। ফেরার পথে নিয়ে এসেছিল চাঁদের পাথর। আর ফেলে এসেছিল প্রচুর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সমেত চন্দ্রযানটিকেই। নাসা কর্তৃপক্ষকে এর কারণ জানতে চাওয়া হলে তাঁরা জানান, সেই অতিরিক্ত ভার বহন করার সাধ্য সেইসময় ভয়েজারের ছিল না।
পরিবেশ-প্রকৃতিকে আবর্জনায় ভরিয়ে দেওয়া হয়তো মানবজাতির সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্তু দূষণের ভয়ে পৃথিবী ছেড়ে যে গ্রহে নতুন বাসা বাঁধার পরিকল্পনা চলছে জোরকদমে, সেই গ্রহটিও কি অল্পদিনের মধ্যে পরিণত হবে আবর্জনা বালতিতে? উত্তরটা হয়তো সময় বলবে।
Powered by Froala Editor