মানুষের মৃতদেহ বাড়াবে মাটির উর্বরতা, দেহদানে সম্মতি ১৫,০০০ জনের

"কবর দাও বা চিতায় পোড়াও, মরলে সবাই মাটি"। কিন্তু সেই মাটিতে গাছ জন্মায় না, ফুল ফোটে না। চাষ-আবাদ করা যায় না। অন্যদিকে মৃতদেহ থেকে নিঃসৃত কার্বন বাতাসের বা মৃত্তিকার দূষণ ঘটায়। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিলেই মৃতদেহকেও পরিবেশের কাজে লাগানো যায়। শবদেহ প্রক্রিয়াকরণের সাহায্যে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা যায়। সম্প্রতি এমনই উদ্যোগ নিয়েছেন আমেরিকা নিবাসী ক্যাটরিনা স্পেড।

আরও পড়ুন
মৃতদেহের সঙ্গে বসবাস, ইন্দোনেশিয়ার একটি সম্প্রদায়ে এমনটাই রীতি

বিশেষ পর্যবেক্ষণের পর দেখা গেছে, মাত্র ৩০ দিনের প্রক্রিয়াতেই শবদেহ ‘ডিকম্পোজ’ করে মাটিতে মিশিয়ে ফেলা যায়। আর এর ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমবে প্রায় ১.৪ টন। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫০০০ মানুষ মৃত্যুর পর দেহদানে সম্মত হয়েছেন, এবং ভবিষ্যতে আরো মানুষ এই উদ্যোগের পাশে এসে দাঁড়াবেন বলেই মনে করছেন স্পেড।

আরও পড়ুন
যেখানে ঘুমোচ্ছেন মধুসূদন, মৃতদেহে ছায়া দিচ্ছে পরী, কলকাতার হারানো অতীত ও এক কবরস্থান

১৩ বছর আগে নিজের মৃত্যুর কথা ভাবতে গিয়ে এই পরিকল্পনা মাথায় আসে স্পেডের। তারপর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি তৈরি করে বিশেষ প্রযুক্তির খুঁটিনাটি নকশা তৈরি করেন। এভাবেই ক্রমশ তাঁর উদ্যোগ গড়ে ওঠে। এই উদ্যোগ একদিকে পরিবেশের কথা বলে, অন্যদিকে মৃতদেহ সৎকারের ধর্মীয় পদ্ধতিগুলো থেকে বেরিয়ে আসার কথাও বলে।

আরও পড়ুন
মায়ের মৃতদেহের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন বাবা, বুদ্ধদেব বসুর কাছে মাতৃস্মৃতি ওটুকুই

পৃথিবীর প্রথম শবদেহ প্রক্রিয়াকরণ ফার্ম তৈরি করেছেন স্পেড। তাঁর এই উদ্যোগের নাম 'রিকম্পোস'। সমাধি বা সৎকারের পুরনো পদ্ধতিগুলির থেকে এই পদ্ধতি অনেকটাই আধুনিক ও যুগোপযোগী। বর্তমানে পরিবেশের নানা সমস্যার কথাই যখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে, তখন এধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে জরুরি।