মাত্র দুমাসে গলেছে ৬০০ বিলিয়ন টন বরফ, ২.২ মিমি বৃদ্ধি জলস্তরের

শীতকাল তো চলেই গেল। বসন্তও যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। আবার গ্রীষ্ম এসে হানা দেবে। এই একটা ঋতু বোধহয় কারোরই পছন্দ নয়। আর এমনিতেই প্রতিবছর গরম যে পরিমাণে বাড়ছে, তাতে নাভিঃশ্বাস উঠতে আর বাকি কী থাকছে! আর শুধু মানুষেরই নয়, নাভিঃশ্বাস উঠছে প্রকৃতিরও। তার সবটা হয়তো আমরা ভালো টের পাচ্ছি না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে।

আরও পড়ুন
বরফ গলে বেরিয়ে আসছে প্রাচীন ভাইরাস, মিশছে পৃথিবীতে – দায়ী কারা?

গতবছর সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছে ২.২ মিলিমিটার। এই সামান্য পরিবর্তন আমাদের বুঝতে পারার কথা নয়। তাই খুব একটা চিন্তাও আসেনি। কিন্তু এর কারণটা যে বেশ ভয়াবহ। জলস্তরের এই সামান্য বৃদ্ধির জন্যই গ্রিনল্যান্ডের ৬০০ বিলিয়ন টন বরফ গলে গিয়েছে। হ্যাঁ, ৬০০ বিলিয়ন টন। আর তাও মাত্র দুমাসের মধ্যে। স্যাটেলাইট প্রেরিত ছবিতে ধরা পড়েছে এমনটাই।

আরও পড়ুন
বরফ গলে বেরিয়ে পড়ছে সবুজ, প্রবল সংকটের মুখে মেরু অঞ্চল

রেকর্ড বলছে গত বছর মেরু অঞ্চলের উষ্ণতা সমস্ত রেকর্ড ভেঙেছিল। সেই গরমে হিমবাহের বরফ তো গলেছেই, গলেছে সমুদ্রের মধ্যে ভাসমান হিমশৈল্যও।

আরও পড়ুন
মেরু ভালুকের মুখে নিজেরই সন্তানের দেহ, উত্তর মেরুর ছবি ভাইরাল নেট দুনিয়ায়

বরফ গলনের পরিমাণ গত ১০ বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আর গত ৩০ বছরের হিসাবে বেড়েছে ৭ গুণ। আপাতত মেরু অঞ্চলের বরফ গলার ঘটনাই দৃশ্যমান হলেও, ক্রমশ তার কোপ এসে পড়বে সমস্ত দেশেই। আর এসবের জন্য মানুষের ক্রিয়াকলাপকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। সমুদ্রের জলস্তর এখন খুব সামান্যই বেড়েছে। তবে এই ধারা অব্যাহত থাকলে এই শতকের শেষ দিকেই অন্তত ৪০০ মিলিয়ন মানুষের বাসস্থান হারাবে। আর সেটা কিন্তু প্রকৃতির খেয়ালে নয়, তার জন্য দায়ী মানুষই।

আরও পড়ুন
বদলাচ্ছে অবস্থান, উত্তর মেরুর চৌম্বক ক্ষেত্র সরে যাচ্ছে রাশিয়ার দিকে

তবে প্রকৃতি এখনও নিজের মতো করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মেরু অঞ্চলের বরফ যেমন গলছে, তেমনই হঠাৎ বরফ জমতে শুরু করেছে আটলান্টিক অঞ্চলে। তবে প্রকৃতিতে কার্বনের পরিমাণ যেভাবে বাড়ছে, তাকে আটকাতে না পাড়লে আমাদের শেষের শুরু আর বেশি বাকি নেই। তাই সময় নষ্ট করতে চাইছেন না বিজ্ঞানীরাও। বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্কের মাঝেই শুরু হয়ে গিয়েছে গ্লাসগো সম্মেলনের প্রস্তুতি। কিন্তু শেষপর্যন্ত তো সবটাই নির্ভর করে যায় আমাদের সচেতনতার উপর। আমাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে, ভবিষ্যত প্রজন্মের বিষয়ে কি একটুও চিন্তিত আমরা?